Dhaka, শুক্রবার, ডিসেম্বর ২০, ২০২৪

ঠাকুরগাঁওয়ে ৮ মাসে বিচ্ছেদ ১১শ', এগিয়ে নারীরা

Mohin Talukder

Mohin Talukder

প্রকাশিত: ০২ অক্টোবর, ২০২৪, ১১:০২ এএম
Bangla Today News

কিছু দম্পতি ছয় মাস, কেউ দুই বছর, আবার কেউ পাঁচ বছর ধরে বিয়ে করেছেন। অনেকেই বিয়ের এক দশক পর দুই সন্তানের বাবা-মা। স্বামী-স্ত্রীর এত দীর্ঘ সম্পর্ক এক নিমিষেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। কয়েক বছর আগেও ঠাকুরগাঁওয়ে এ ধরনের বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা কম শোনা গেলেও বর্তমানে তালাকের হার বেড়েছে।

প্রতিদিন চারটি তালাক হচ্ছে। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক, বৈবাহিক সম্পর্কের অভাব, যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের কারণে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। জেলা রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত গত ৮ মাসে জেলায় ১১০০ বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। এর মধ্যে 600 জন নারী, 300 জন ছেলে এবং 200 জন পারিবারিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন।

স্থানীয় সমাজকর্মী আবু মহিউদ্দিন বলেন, তালাক সমাজে একটি রোগের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিবাহ বিচ্ছেদের প্রতিকারের জন্য সচেতনতা অপরিহার্য। বর্তমান সমাজে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কারণে বেশিরভাগ সম্পর্কের অবসান ঘটছে। সুন্দর পারিবারিক সম্পর্কের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সমাজের সবাইকে সচেতন করতে হবে। বিবাহবিচ্ছেদ কমাতে ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রচার করতে হবে। ঠাকুরগাঁও পৌরসভার ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে বিবাহ বিচ্ছেদ অনেক বেড়ে গেছে। বিচ্ছেদ বা বিবাহবিচ্ছেদের অনেক কারণ রয়েছে।

গত 1 মাসে আমি যত ডিভোর্স করেছি তার বেশিরভাগই মেয়ের পক্ষ থেকে হয়েছে। ছেলের পক্ষ থেকে বা উভয় পক্ষ থেকে বিবাহ বিচ্ছেদ খুবই বিরল। আর মেয়ের দিক থেকে বিচ্ছেদের অনেক কারণ আছে। এর মধ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক, দাম্পত্য কলহ ও যৌতুকের জন্য নির্যাতনই প্রধান কারণ। আমরা কোনোভাবে ব্রেকআপ ঠেকানোর চেষ্টা করি, কিন্তু তারপরও তা সম্ভব হয় না। আর বিবাহ বিচ্ছেদের ফল ভোগ করতে হয় অনেককেই। ঠাকুরগাঁও শহরের হাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় ৪০ বছর হলো। আমার স্ত্রী এবং আমি এতদিন বিয়ে করেছি। পৃথিবীতে অনেক ঝগড়া হয়। এগুলো নিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করি না। কিন্তু আমরা কখনই ভাবিনি যে আমরা আলাদা হয়ে যাব। আমরা আমাদের সন্তানদের একই শিক্ষা দিয়েছি। ঠাকুরগাঁও সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু বকর সিদ্দিক বলেন, স্বামী-স্ত্রী মিলে সংসারে সব সমস্যার সমাধান করবেন।

কিন্তু এখন দেখা যায় সামান্য সমস্যা হলেই ডিভোর্স হয়ে যায়। আমাদের পারিবারিক বন্ধন এখন খুবই দুর্বল। তাই আমাদের সকলকে পরিবারের গুরুত্ব বুঝতে হবে এবং এ সম্পর্কে সবাইকে শিক্ষা দিতে হবে। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বলেন, যারা বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আদালতে আসেন তাদের মধ্যে নারী পক্ষ থেকে বেশি আসে। সংসারে স্বামী-স্ত্রীর মিল না থাকায় বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তবে আমি মনে করি, পারিবারিক জীবনে সমস্যা সমাধান করা এবং একে অপরের ভুল স্বীকার করাই জীবন। জেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের রেজিস্ট্রার হেলাল উদ্দিন বলেন, তালাক বা তালাক সাধারণত তিন প্রকার। ছেলের পক্ষ থেকে তালাক, মেয়ের পক্ষ থেকে তালাক এবং উভয় পক্ষ থেকে তালাক। এ বছর নারীদের দিক থেকে ডিভোর্সের সংখ্যা বেড়েছে। পারিবারিক বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা খুবই কম।

Leave a comment