ঝালকাঠির নলছিটিতে ঘুসের টাকা দিয়েও ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্তরা সরকারি সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ করেছেন বাছাই প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত এক ট্যাগ অফিসারের বিরুদ্ধে। উপজেলার মগড় ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের দুই মহিলা ইউপি সদস্য ( আশা আক্তার ও ময়না বেগম) এ অভিযোগ করে মঙ্গলবার( ৮ অক্টোবর) উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্ত কর্মকর্তা হলেন, সদ্য সাবেক উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা উজ্জল কৃষ্ণ বেপারী। (যিনি অন্যত্র (ঢাকা হেড অফিস) বদলি হয়ে মঙ্গলবার ( ৮ অক্টোবর)নলছিটি ছেড়ছেন।)
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালে উপজেলার মগড় ইউপির ১৫২( এক শত বায়ান্ন) জন ক্ষতিগ্রস্তকে সম্প্রতি( ৫ অক্টোবর) গৃহ নির্মাণের জন্য সরকারি সাহায্য জনপ্রতি এক বান্ডিল( এক বান) টিন ও ৫ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়। ইতোপূর্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মৌখিক নির্দেশে ওই ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা তাঁর কাছে দাখিল করেন ইউপি সদস্যরা। তাদের দেওয়া নামের তালিকা সরেজমিনে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা উজ্জ্বল কৃষ্ণ বেপারীকে ওই ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হয়। ইউপি সদস্যদের দেওয়া তালিকা বাছাইয়ে ঠিক রাখার আশ্বাস দিয়ে ওই কর্মকর্তা ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে জনপ্রতি এক হাজার টাকা করে ঘুষ নেন। ইউপি সদস্যরা ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে ওই ঘুসের টাকা তুলেন। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে টিন ও টাকার চেক বন্টনকালে ইউপি সদস্যদের দেওয়া তালিকার অনেকেই এই সাহায্য পায়নি। ঘুসের টাকা দিয়েও সাহায্য না পাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয় ক্ষতিগ্রস্তরা।
মগড় ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য আশা আক্তার অভিযোগ দেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন , ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত ১৫ জনের নামের তালিকা ইউএনও( উপজেলা নির্বাহী অফিসার) স্যারের মৌখিক নির্দেশে তার কাছে জমা দেন তিনি । সরেজমিনে যাচাইয়ে তা ঠিক রাখার জন্য ট্যাগ অফিসার উজ্জল কৃষ্ণ বেপারীকে জনপ্রতি এক হাজার টাকা করে পনের জনের জন্য ১৫( পনের) হাজার টাকা দেন তিনি । কিন্তু তার দেওয়া তালিকার ক্ষতিগ্রস্তরা কেউ সাহায্য পায়নি। এতে ক্ষতিগ্রস্তরা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন। তারা ভাবছেন তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তিনি ওই কর্মকর্তাকে টাকা দেননি। তিনি আরও জানান, ওই কর্মকর্তা ইউনিয়নের ১২ জন ইউপি সদস্যের কাছ থেকেই ওই হারে টাকা নিয়েছেন। এখন হয়তো অনেকেই তা স্বীকার করবেন না।
অপর ইউপি সদস্য ময়না বেগম জানান, তিনি ৫জন ক্ষতিগ্রস্তের জন্য ওই কর্মকর্তাকে ৫০০০ টাকা দিয়েছেন। তারাও কেউ সাহায্য পায়নি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কর্মকর্তা উজ্জ্বল কৃষ্ণ বেপারী সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সরেজমিনে গিয়ে যাদের ঘরবাড়ির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ দেখেছি, তাদের নাম ঠিক রেখে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে তালিকা দিয়েছি। তাতে অভিযোগকারী ওই মেম্বার সাহেবদের দেওয়া তালিকা থেকে যারা সাহায্য পাওয়ার যোগ্য তাদের কয়েকজনের নামও দিয়েছি। কিন্তু কেন তারা সাহায্য পায়নি তাতো আমি বলতে পারব না। আমিতো চূড়ান্ত কর্তৃপক্ষ নই। আমি শুধু যাচাই বাছাই করেছি। ইউএনও স্যার চূড়ান্ত সিন্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, মেম্বর সাহেবদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে তারা এসব কথা বলছেন।
নলছিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নজরুল ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, সমস্ত উপজেলায় রেমালে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে টিন ও টাকার চেক স্বচ্ছভাবে বন্টন করা হয়েছে। যেটা সবাই জানে। আমি ওই কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করেছি। তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এরপর ওই মেম্বার সাহেবদেরকে বলেছি যদি একান্ত ক্ষতিগ্রস্ত কেউ সাহায্য না পেয়ে থাকেন, তাদের জন্য ব্যবস্থা করা হবে।
মশিউর রহমান রাসেল
গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে একক পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে,কোনো অসুবিধা হবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বিলাইছড়িতে ফুটবল টুর্ণামেন্ট কোয়ার্টার ফাইনালে ৮ দল অংশগ্রহণ
ঝালকাঠি প্রতিনিধি