Dhaka, শুক্রবার, ডিসেম্বর ২০, ২০২৪

জান্নাতে যাওয়া প্রথম দলের চেহারা হবে পূর্ণিমার চাঁদের ন্যায় দীপ্তিমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর, ২০২৪, ০১:১১ এএম
Bangla Today News

ক্ষণস্থায়ী পৃথিবী মুমিনের জন্য পরীক্ষার হলের মতো। পরকালে সফল হতে অবশ্যই এই পরীক্ষায় সফলকাম হতে হবে। এরপরই মিলবে কাঙ্ক্ষিত জান্নাত। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘জমিনের ওপর যা কিছু আছে আমি সেগুলোর শোভাবর্ধন করেছি, যাতে আমি মানুষকে পরীক্ষা করতে পারি যে, আমলের ক্ষেত্রে কারা উত্তম।’ (সুরা কাহাফ, আয়াত: ৭)

অপর আয়াতে মহান আল্লাহ তা‘য়ালা বলেন, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে তাদের সুসংবাদ দাও, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতসমূহ, যার তলদেশ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে। (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৫)। আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে এবং কেয়ামতের দিন তাদের পূর্ণমাত্রায় বিনিময় দেয়া হবে। যে ব্যক্তিকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করা হলো এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হলো, অবশ্যই সে ব্যক্তি সফলকাম হলো, কেননা পার্থিব জীবন ছলনার বস্তু ছাড়া আর কিছুই নয়। (সুরা ইমরান, আয়াত: ১৮৫)

এ ক্ষেত্রে জান্নাতের সামান্য জায়গাও পৃথিবীর সবকিছুর চেয়েও উত্তম। সাহল ইবনু সা’দ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ’জান্নাতে চাবুক পরিমাণ সামান্যতম স্থানও দুনিয়া ও এর মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়েও উত্তম।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩০২৩)

অন্যদিকে পরকালে সফলকাম প্রত্যেকে জান্নাতে স্থায়ীভাবে থাকবেন। এ বিষয়ে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, তারা জান্নাতের অধিবাসী। তারা সেখানে হবে স্থায়ী।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ৮২)

তবে জান্নাতিদের মধ্যে একটি দল রয়েছে যারা পূর্ণিমার চাঁদের ন্যায় দীপ্তিমান চেহারা নিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন- আমার উম্মতের একটি দল জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদের সংখ্যা হবে সত্তর হাজার। তারা পূর্ণিমার চাঁদের মতো চমকাতে থাকবে। আবূ হুরায়রা (রা.) বলেন, ওই সময় উককাশা ইবনু মিহসান আসাদী দাঁড়ালেন, তার গায়ে একটি চাদর ছিল।

তিনি বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ (সা.)! আপনি আল্লাহর কাছে দোয়া করুন, তিনি যেন আমাকেও তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। পরে রাসুল (সা.) বললেন, ইয়া আল্লাহ! একে তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নিন। এরপর আরেকজন আনসারী দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ (সা.)! আপনি আল্লাহর কাছে দোয়া করুন, তিনি যেন আমাকেও তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। জবাবে রাসুল (সা.) বলেন, এই সুযোগ লাভে উককাশা তোমার অগ্রগামী হয়ে গেছে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪১৫)

এছাড়াও সহিহ মুসলিমের অপর একটি হাদিসে এসেছে- রাসুল (সা.) বলেছেন, প্রথমে যে দলটি জান্নাতে প্রবেশ করবে তাদের চেহারা পূর্ণিমার চাঁদের ন্যায় দীপ্তিমান হবে। তাদের পর যারা (জান্নাতে প্রবেশ করবে) তাদের চেহারা আকাশের অতিশয় উজ্জ্বল তারকারাজির ন্যায় হবে। তারা প্রস্রাব-পায়খানা করবে না, থুতু ফেলবে না এবং নাক ঝাড়বে না। তাদের চিরুনি হবে স্বর্ণের। তাদের শরীরের ঘাম থেকে মিশকের ঘ্রাণ আসবে এবং তাদের আংটি হবে `ধুপদানী‘ যা হবে আগর কাষ্ঠের তৈরি। তাদের স্ত্রীরা হবে আয়তলোচনা (সুন্দরী) হুর। তাদের চরিত্র হবে একই ব্যক্তির চরিত্রের ন্যায়। আদি পিতা আদম (আ.) এর আকৃতি হবে তাদের আকৃতি। ষাট হাত লম্বা হবে তাদের দেহ। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬৮৮৬)

Leave a comment