Dhaka, শুক্রবার, জানুয়ারী ১০, ২০২৫

গাজীপুরে বিনা নোটিসে বন্ধ সাফারি পার্ক,"রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার"

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর, ২০২৪, ০৮:৪৮ এএম
Bangla Today News

 

 

 

কোনোরকম নোটিস ছাড়াই গাজীপুর সাফারি পার্ক গত তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। বিনা নোটিসে পার্কটি বন্ধ রাখায় প্রতিদিন শত শত মানুষ পার্কের মূল ফটক থেকে ফিরে যাচ্ছেন।

 

এতে প্রতিনিয়ত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এরই মধ্যে প্রায় অর্ধকোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে সরকার। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এ অঙ্ক।

 

রাজধানী থেকে খুব কাছে গাজীপুরের শ্রীপুরে সাফারি পার্কটি বহু পর্যটকের কাছে চিত্তবিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছিল। কিন্তু কোনো নোটিস ছাড়াই দিনের পর দিন বন্ধ হয়ে পড়ে থাকায় হতাশ পর্যটক থেকে শুরু করে স্থানীয় লোকজন। আসন্ন পর্যটন মৌসুমকে বিবেচনায় নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সাফারি পার্কটি খুলে দেওয়ার দাবি তাদের। এমন পরিস্থিতিতে আশার বাণী শোনা গেছে সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের কাছে। শিগগির সাফারি পার্কটি খুলে দেওয়ার জন্য প্রক্রিয়া চালাচ্ছে বলে জানা গেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সূত্রে। 

 

এ প্রসঙ্গে গাজীপুর সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, পার্কটিতে ভাঙচুর চালিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করা হয়েছে। পরে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বন্ধ করে দেওয়া হয়। যেহেতু এখন পর্যটক মৌসুম চলে এসেছে তাই আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে পার্কটি পর্যটকদের উপযোগী করে খুলে দেওয়ার জন্য কাজ করছি। 

 

এ বিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমীন আক্তার বলেন, সাফারি পার্কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এসব ঠিকঠাক করতে কিছু সময় লেগেছে। তবে আমাদের প্রত্যাশা, শিগগির পার্কটি পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া সম্ভব হবে। সব সংশয় কাটিয়ে পার্কটি আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পাবে বলে আশা করছি।

 

সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন এ পার্কে হামলা চালানো হয়। এ সময় এক দল দুর্বৃত্ত মূল ফটক ভেঙে পার্কের ভেতরে প্রবেশ করে অফিসকক্ষ, পর্যটক বহনকারী যানবাহনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। হামলা চলাকালে পার্কের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। এ ঘটনায় সাফারি পার্কের ভেতরে থাকা বেশ কিছুসংখ্যক প্রাণী খোয়া যায়। পার্ক কর্তৃপক্ষ বলছে, সবমিলিয়ে তাদের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় আড়াই কোটি টাকা। পরবর্তী সময়ে নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতির কারণে পার্কটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এদিকে দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় গত তিন মাসে প্রায় অর্ধকোটি কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে পার্কটি।

 

শনিবার বেলা ১১টার দিকে সরেজমিন সাফারি পার্কের মূল ফটকের সামনে দর্শনার্থী না থাকলেও পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে থাকতে দেখা যায় জালাল মিয়াকে। তার সঙ্গে আলাপচারিতার সময় তিনি বলেন, অনেকেই না জেনে পার্কটিতে ঘুরতে আসে। কিন্তু মূল ফটক বন্ধ দেখে হতাশ হয়ে ফিরে যায়। প্রতিদিন শত শত মানুষ আসে এখানে। মূলত তাদের কাছে বিক্রি করতেই পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসি। আরও কথা হয় টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলা থেকে পরিবার নিয়ে সাফারি পার্কে ঘুরতে আসা পর্যটক আবু নাঈমের সঙ্গে।

 

এ সময় তিনি বলেন, অনেক আশা নিয়ে এসেছিলাম গাজীপুরের সাফারি পার্ক দেখতে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, এতদূর থেকে এসে দেখি পার্কটি বন্ধ। তাই আশার কবর দিয়ে নিরাশা নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে পর্যটক আবু নাঈম আরও বলেন, পার্কটির মূল ফটক বন্ধ। অথচ কোনো নোটিস নেই। দর্শনার্থীদের জন্য নোটিস দেওয়া দরকার ছিল। এটা তো কর্তৃপক্ষের এক ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা।

গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি

 

 

মোঃ শাহাদাত হোসেন 










 

Leave a comment