Dhaka, বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪

পুলিশের হাতেই অননুমোদিত লেজার লাইট, থামাবে কে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:১২ এএম
পুলিশের হাতেই অননুমোদিত লেজার লাইট, থামাবে কে?

সন্ধ্যো নামার পর থেকেই চট্টগ্রাম নগরীর মোড়গুলোতে সবুজ রঙয়ের লেজার লাইটের রশ্মি দেখা যায়। কোত্থেকে সেই রশ্মি আসছে, কৌতূহল নিয়ে তাকালেই দেখা যাবে, যান নিয়ন্ত্রণে 'ক্ষতিকর' এই লাইট ব্যবহার করছে খোদ পুলিশ। নিষিদ্ধ লেজার লাইট এখন যত্রতত্র ব্যবহার করছে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। এতে বিড়ম্বনায় পড়ছেন পথচারী থেকে শুরু কওে গাড়ি চালকরা। অননুমোদিত লেজার লাইট ব্যবহারে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের সুবিধা হলেও দৃষ্টি হারানোর শঙ্কা বাড়ছে সাধারণ মানুষ ও যান চালকদের। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হচ্ছে ভুক্তভোগীসহ বিভিন্ন সচেতন মহলের। গত বুধবার রাতে সরেজমিনে চট্টগ্রাম নগরীর অলংকার, একেখান, জিইসি, হালিশহর, ষোলশহর ২ নম্বর গেইট, আগ্রাবাদ, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, বাস টার্মিনাল, নতুন ব্রীজ, নিউমার্কেট মোড়, ইপিজেড মোড়, নীমতলা বিশ্বরোড এলাকা ঘুরে প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ মোড়েই ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের যানবাহন নিয়ন্ত্রণে নিষিদ্ধ লেজার লাইটের ব্যবহার করতে দেখা যায়। এসব মোড়ে চলাচলকারী বাস, গাড়ি, মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশার চালক এবং পথচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে ট্রাফিক পুলিশ এই লেজার লাইট ব্যবহার করছে। এই লাইট চোখে এসে পড়লে তৎক্ষণাৎ চোখ ঝাপসা হয়ে যায়, যা স্বাভাবিক হতে কয়েক মিনিট সময় লাগে। অনেক সময় চোখ জ্বালাপোড়াও করে। এ ছাড়া, চোখের ক্ষতির পাশাপাশি এই লাইটের ব্যবহারে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও। সাহাবুদ্দীন নামে একজন চালক বলেন, লেজার লাইটের আলো চোখে পড়তেই চোখ ঝাপসা হয়ে যায়। চলন্ত গাড়িতে এ ধরনের আলো চোখে পড়লে মুহূর্তেই ঘটে যেতে পারে বড় কোন দুর্ঘটনা। ইমরান হোসেন নামের আরেক চালক বলেন, ১৫ দিন আগে এক রাতে অলংকার এলাকায় সার্জেন্ট লেজার লাইট মারতেই আমার চোখে পড়ল। মনে হলো যেন চোখে মরিচের গুঁড়া পড়েছে। এতে চোখ লাল হয়ে যায়। তীব্র ব্যথা হয়। পরদিন ডিউটিতে না গিয়ে ডাক্তার দেখাই। দুইটা ড্রপ ব্যবহারের পর চোখ স্বাভাবিক হয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সড়কে চলাচলে সামান্য ত্রুটি পেলে তারা মামলা দিয়ে দেয়। অথচ তারা প্রকাশ্যে অনিয়ম করে যাচ্ছে। আমরা এসব অনিয়মের বিচার কার কাছে চাইব? লেজার লাইটের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের অধ্যাপক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, লেজার লাইট মূলত সার্জারির প্রয়োজনে ব্যবহার হয়। এই লাইট সরাসরি কারও চোখে পড়লে রেটিনা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এছাড়াও অন্যান্য মারাত্মক উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তাই এই লাইটের ব্যবহার পরিহার করা উচিত। অপর এক চিকিৎসক বলেন, দূর থেকে লেজার লাইটের আলো শরীরের অন্যান্য স্থানে পড়লে সমস্যা হয় না। সরাসরি চোখে পড়লে রেটিনা এবং কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বয়স্ক ব্যক্তি, যাদের রেটিনা কিংবা কর্নিয়া আগে থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের ওপর লেজার লাইটের ক্ষতিকর প্রভাব তুলনামূলক বেশি। এই লাইটের আলো কখনো কখনো অন্ধত্বের কারণ হতে পারে। এ বিষয়ে সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের উপ-ট্রাফিক কমিশনার আহমদ পিয়ার বলেন, লেজার লাইট আসলেই চোখের জন্য বেশ ক্ষতিকর। আমরা বারংবার সকলকে সতর্ক করি যাতে পুলিশের দ্বারা সাধারণ মানুষের ক্ষতি না হয়। তবে এ বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখবো। প্রতিনিধি মোঃ নুর নবী

Leave a comment