Dhaka, শুক্রবার, ডিসেম্বর ২০, ২০২৪

গণভোট, উপ-রাষ্ট্রপতি, উপ-প্রধানমন্ত্রী ও তত্ত্বাবধায়ক চায় বিএনপি

সিয়াম ইসলাম

প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর, ২০২৪, ০১:১০ এএম
Bangla Today News

বিএনপি সাংবিধানিক সংস্কার কমিশনের কাছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন, গণভোট, সংসদের উচ্চকক্ষ এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় উপ-রাষ্ট্রপতি ও উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদের প্রস্তাব দিয়েছে। এসব প্রস্তাবসহ মোট ৬২টি প্রস্তাব সংস্কার কমিশনে জমা দিয়েছে দলটি।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জাতীয় সংসদে সংবিধান সংস্কার কমিশনের কার্যালয়ে বিএনপির প্রস্তাবগুলো কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রিয়াজের কাছে জমা দেন। সকাল ১১টার পর তিনি অফিসে আসেন। সেখানে প্রায় আধা ঘণ্টা অবস্থান করেন বিএনপির প্রতিনিধি দল। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন রানা।

সংবিধান সংস্কার কমিশনে বিএনপির প্রস্তাব তুলে ধরে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, "আমরা সংবিধানের তফসিল পর্যন্ত প্রস্তাবনা থেকে শুরু করে ৬২টি জায়গায় বিভিন্ন প্রস্তাব ও সংশোধনী জমা দিয়েছি। আমরা আশা করি কমিটি সেগুলো বিবেচনা করবে।"

সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রস্তাবের মূল অংশে বাংলাদেশের রাজনীতির চরিত্র পরিবর্তনের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে যেসব ধারা তৈরি করেছিল, তার মধ্যে বিএনপি কিছু নতুন প্রস্তাব দিয়েছে।

তিনি বলেন, প্রস্তাবে বাংলাদেশের জনগণের আশা-আকাঙ্খা এবং জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের শহীদদের রক্তের অঙ্গীকার এবং বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতাকে সামনে রেখে আমরা আমাদের প্রস্তাবগুলো দিয়েছি যাতে সংসদীয় স্বৈরাচার সৃষ্টি না হয়। ভবিষ্যৎ

প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতে একটি প্রস্তাব করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা একটি বিধান রেখেছি যে কেউ পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবে না। আমরা প্রস্তাব করেছি। সংসদের নতুন উচ্চকক্ষ গঠনের বিধান।"

বিচার বিভাগ নিয়ে বিএনপি নতুন প্রস্তাব দিয়েছে উল্লেখ করে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, অধস্তন আদালতের নিয়ন্ত্রণ সুপ্রিম কোর্টের অধীনে থাকতে হবে।

তিনি আরও বলেন, উপরাষ্ট্রপতি ও উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ নতুন করে সৃষ্টির প্রস্তাব করা হয়েছে। তিনি বলেন, এটা আগেও ছিল, আমরা আবার চালু করার বিধান প্রস্তাব করেছি। যে বিষয়গুলো জনগণের সবচেয়ে বেশি কাঙ্খিত, তত্ত্বাবধায়ক সরকার জনগণের এক নম্বর আকাঙ্ক্ষা, আদালতে বিচারাধীন, আশা করি তা জনগণের অনুকূলে আসবে। আমি গণভোটের বিধান পুনঃপ্রবর্তনের প্রস্তাব করেছি।

তিনি বলেন, আমরা প্রস্তাবে প্রজাতন্ত্র, নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, তফসিলসহ সব বিষয় তুলে ধরেছি। যাতে সংবিধানে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অর্জিত হয় এবং জনগণ তার মূর্ত রূপ পায়। আমি প্রস্তাব করেছি যে রাষ্ট্রের সব অঙ্গে সব ক্ষেত্রে ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি করা হোক।

সংবিধান পুনর্লিখনের বিষয়ে বিএনপি কোনো বক্তব্য দিয়েছে কি না জানতে চাইলে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি ব্যাপক ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছি। যাতে এটি একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান এবং জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণ হয়।

সংসদের অনুপস্থিতিতে সংবিধানের সংশোধনী কীভাবে অনুমোদন হবে জানতে চাইলে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তাদের প্রস্তাব উপস্থাপন করবে।

সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, বিশেষজ্ঞ ও সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা। এই ক্ষেত্রে, এটি নিশ্চিত করা প্রয়োজন যে বেশিরভাগ বিষয়ে সবাই একমত। কিছু ক্ষেত্রে মতবিরোধ থাকতে পারে। যেসব বিষয়ে ঐক্যমত্য আছে সেগুলোকে যদি আমরা প্রতিশ্রুতি দিই এবং নির্বাচনী ইশতেহারে সেগুলো প্রতিফলিত করি, তাহলে সবার অঙ্গীকার থাকবে আগামী নির্বাচনে যেই ক্ষমতায় আসুক সেভাবেই সংবিধান প্রণয়ন করবে।

Leave a comment