Dhaka, বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪

সরকারের পাওয়ার স্ট্রাকচারে মেজর পরিবর্তন আসছে !

সিয়াম ইসলাম

প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০১:১১ এএম
Bangla Today News

১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সময় ঘোষণাকালের সাথে সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছেন যা অনেকে মিস করেছেন।  এই ঘোষণাটা  আগামীর দিনের গতি নির্ধারণের জন্য সবচেয়ে প্রধান ঘটনা এবং যা  থেকে বুঝতে পারি যে সরকারের পাওয়ার স্ট্রাকচারে মেজর পরিবর্তন আসছে।
প্রফেসর ইউনূস বলেছেন,  রাজনৈতিক ঐক্যমত্যে পৌঁছানোর  জন্য ছয়টি কমিশনের চেয়ারম্যানদের নিয়ে একটি জাতীয় ঐক্যমত্য গঠন কমিশন গঠিত হবে যারা রাজনৈতিক দল সহ সকল পক্ষের সাথে বসে, যে সকল বিষয়ে ঐক্যমত্য হবে সেগুলোকে চিহ্নিত করবে ও বাস্তবায়নের প্রস্তাব দেবে।  এই কমিশনের সভাপতি হবেন প্রফেসর ইউনূস  নিজে এবং সহ সভাপতি হবেন অধ্যাপক আলী রিয়াজ।
জাতীয় ঐক্যমত্য  কমিশন নির্বাচনের তারিখ ঠিক করা সহ সংস্কার, ঐক্যমত্য ও নির্বাচনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গুলো নেবে। 
খেয়াল করে দেখবেন, অক্টোবর মাস থেকে আমি একটি পলিটিকাল এডভাইজরি কমিশন গঠনের যে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, ও তাঁদের যে কার্যপরিধি ডিক্লেয়ার করেছিলাম এই কমিশনটা মূলত তাই করবে।
আমি জ্যোতিষী নই, কিন্তু আমার আলাপটা ছিল বেসিক পলিটিকাল কমনসেন্স। 
অনেক ভোগান্তির শিকার ও বিপর্যয়ের পর ইউনুস সরকার কমনসেন্স সিদ্ধান্ত গুলো নিচ্ছেন বলে তাঁদেরকে ধন্যবাদ। 
ইলেকশন ডেটের সিদ্ধান্তটা ভালো। 
কারন ইউনুস এডমিন একটা পারভারস ইন্সেন্টিভে অপারেট করতেছিল। এক দিকে তারা রাজনৈতিক দুর্বলতা বাহ্যিক চাপ ও একটা ভিশান না থাকার  কারণে নিজের থেকে  কোন গভীর সংস্কার করতে অক্ষম অন্য দিকে তারা বলতেছেন সংস্কার না হলে নির্বাচন হবেনা। 
নির্বাচনের দিন ক্ষণের যারা কথা বলছেন, তাঁদেরকে দেশের ও বিপ্লবের  স্বার্থ বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করতেছিলেন। 
এই পারভারস ইন্সেন্টিভটা আজকে বিদায় হয়েছে। এখন সবাইকে কম্প্রোমাইজ করতে হবে। বিপ্লবি ট্রায়ো, ছাত্র শক্তি ভাই ব্রাদার, নাগরিক কমিটি তাঁদেরকে কম্প্রোমাইজ করতে হবে অন্য রাজনৈতিক দলের সাথে কি কি রিফরম হবে, সেই প্রশ্নে, নির্বাচনের প্রশ্নে, ন্যাশনাল কন্সেনসাসে পৌঁছানোর প্রশ্নে।
 তাঁদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, দল গঠনের বিষয়ে, যে বিষয়ে তারা স্বভাবগত বাঙালী হুজ্জতে ডিলে করতেছিলেন।
বিএনপির জন্যেও ইন্সেন্টিভ থাকবে, কম্প্রোমাইজ করার। করলে, তারা আগামী নভেম্বর ডিসেম্বরেই নির্বাচনে যেতে পারবে। আর না করলে, সেটা আরও পেছাবে। ফলে বিএনপির উপরেও চাপ থাকবে।
পলিটিক্স  কম্প্রোমাইজের আরট। ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশে কেউ কম্প্রমাইজ করে না এবসলিউট ভাবে অপারেট করতে চায় ফলে তাঁদের উপরে ন্যাচারাল কন্সট্রেইন্ট গুলো আরোপিত হয়। 
বিগত চার মাসের বিভিন্ন ঘটনায় ইউনুস সরকারের উপরে  ন্যাচারাল কন্সেন্ট্রেইন্ট তৈরি হয়েছে তার ফলে  এই ঘোষণা দিতে ইউনুস সরকার রীতিমত বাধ্য হয়েছে। নইলে তারা নির্বাচনকে সংস্কারের  মুখোমুখী দাঁড়ায় দিয়েছিলেন- যার কোন প্রয়োজন ছিলনা। 
নির্বাচনের রোডম্যাপ  এখন   সবাইকে কম্প্রোমাইজ করতে বাধ্য করবে, এবং নিজেদের পপুলিস্ট রেটরিক ফেলে, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এনগেজ হতে উৎসাহিত করবে।
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে  আওয়ামি লীগের কি হবে? 
আপনারা কি  আওয়ামি লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেবেন? আমি মনে করি, এই প্রশ্নটাও সমাধানযোগ্য।
আওয়ামি লীগের বিচার কীভাবে হবে, সেই প্রশ্নে জাতীয় ঐক্য মত্য  কমিশানকে  সিদ্ধান্ত নিতে হবে। 
 আগামী ছয় মাসের মধ্যে আওয়ামি লীগের বিচার করা সম্ভব এবং তাঁদেরকে বিচারিক প্রক্রিয়াতে শাস্তি দিয়ে, নির্বাচন থেকে বাহিরে রাখা সম্ভব। সেইটার দায় এই সরকারের থাকবে। 
গণহত্যার দায়ে আওয়ামি লীগের শাস্তি হতেই হবে, এটা একটা রুল অফ ল প্রশ্ন। এটা বিএনপি, জামাত বা উপদেষ্টা পরিষদের ইচ্ছার বিষয় না। এই কমিশানের ফলে আমরা জানতে পারবো, দলগুলোর প্রকৃত পজিশন কি। 
এবং সেইটার ভিত্তিতে তাঁদেরকে বিচার  করবো, তারা ন্যায়ের শাসনের প্রশ্নে আছে নাকি পলিটিকাল কম্প্রোমাইজের দিকে আগাচ্ছে।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত, আওয়ামি লীগকে বিচার না করা পর্যন্ত নির্বাচন হবেনা। এই সকল চিন্তা পারভারস ইন্সেন্টিভ তৈরি করে। 
সকল মানুষ নিজের ইন্সেটিভে অপারেট করে। আজকে নির্বাচনের সময়কালের যে ধারনা চিফ এডভাইজার দিয়েছেন সেইটা এই    পারভারস ইন্সেন্টিভ গুলোকে সমাধান করবে। 
এইটা একটা ভালো কাজ।   জাতীয় ঐক্যের  কমিশান ঘোষণা আরো ভালো কাজ। 
এই কমন সেন্স সিদ্ধান্ত গুলো তিন মাস আগে বলছিলাম, তখন শুনলে এতো দিনের হুজ্জত গুলো এড়াইতে পারতেন। 

Leave a comment