স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, যারা টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমার মাঠ নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে হতাহতের ঘটনায় জড়িত তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। এতে ছাড় দেওয়ার কোনো অবকাশ নেই। খুনিদের কোনো অবস্থায় ছাড় দেওয়ার সুযোগ নাই। যারা প্রকৃত দোষী তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বাংলাদেশ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে টঙ্গীতে আসন্ন বিশ্ব ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের (জোবায়ের ও সাদ) সঙ্গে বিশেষ আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
দেশে বড় সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা, সীমান্তে সতর্ক বিজিবি
41.6 percent of young women are married before the age of 18
আইন উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা বৈষম্যবিরোধীদের
উপদেষ্টা বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। অন্যায়কারীকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। সঠিক তদন্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপকে অনমনীয় অবস্থান থেকে সরে এসে ছাড় দিতে হবে। তবেই আমরা একটি সুন্দর ও সুশৃঙ্খল বিশ্ব ইজতেমা উপহার দিতে পারব।
উপদেষ্টা এসময় বিশ্ব ইজতেমার মাঠে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং আহতদের আশু আরোগ্য কামনা করেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সভাপতিত্বে বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল আব্দুল হাফিজ (অব.), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী প্রমুখ।
এর আগে, টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে বুধবার ভোর রাত ৩টার দিকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় নিহতরা হলেন- কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু মিয়া (৭০) ও ঢাকার দক্ষিণখানের বেড়াইদ এলাকার বেলাল (৬০)। নিহত বাকি ২জনের নাম জানা যায়নি।
আহতরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা আব্দুর রউফ (৫৫), ময়মনসিংহের মজিবুর রহমান (৫৮), আব্দুল হান্নান (৬০), টঙ্গীর জহুরুল ইসলাম (৩৮), গোপালগঞ্জের আরিফ (৩৪), সাভারের ফয়সাল (২৮), নরসিংদীর তরিকুল (৪২), চট্টগ্রামের সাহেদ (৪৪), নরসিংদীর উকিল মিয়া (৫৮), টঙ্গীর পান্ত (৫৫), খোরশেদ আলম (৫০), কেরানীগঞ্জের বেলাল (৩৪), নারায়ণগঞ্জের আনোয়ার (৫০), আবু বক্কর (৫৯), আরিফুল ইসলাম (৫০), সাভারের আনোয়ার (২৬), নোয়াখালীর আনোয়ার (৭৬) ও সাতক্ষীরার ফোরকান আহমেদ (৩৫)। তাৎক্ষণিকভাবে আহত বাকিদের নাম জানা যায়নি।
স্থানীয়রা জানান, রাত ৩টার দিকে সাদপন্থিরা তুরাগ নদীর পশ্চিম তীর থেকে কামারপাড়া ব্রিজসহ বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করতে থাকে। এ সময় ময়দানের ভেতর থেকে যোবায়ের পন্থিরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। জবাবে সাদপন্থিরাও পাল্টা হামলা চালায়। এক পর্যাায়ে সাদপন্থিরা ময়দানে প্রবেশ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে বহু হতাহত হয়।
এদিকে ইজতেমা ময়দানে সংঘর্ষের ফলে হতাহতদের টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। গুরুতর আহতদের ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।