ক্রিকেট মাঠে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের নিয়ে বানানো হয় ‘হল অব ফেম’। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি ২০০৯ সাল থেকে প্রায় প্রতিবছরই তাদের এই তালিকা হালনাগাদ করে আসছে। ২০২১ সালে নিজেদের ক্রিকেটারদের নিয়ে ‘হল অব ফেম’ প্রকাশ করে আসছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও (পিসিবি)। নতুন করে তারা তালিকায় সাবেক চার ক্রিকেটারকে যুক্ত করেছে।
আজ (শুক্রবার) এক বিবৃতিতে ‘হল অব ফেম’–এ নতুন হালনাগাদকৃত চারজনের নাম প্রকাশ করেছে পিসিবি। তারা হলেন– ইনজামাম-উল-হক, মিসবাহ-উল-হক, মুশতাক মোহাম্মদ ও সাঈদ আনোয়ার। এর আগে থেকে পিসিবির মর্যাদাপূর্ণ ‘হল অব ফেম’–এ আছেন ১০ ক্রিকেটার। ১১ সদস্যের (সাবেক ক্রিকেটার, সাংবাদিক ও বিশ্লেষকের সমন্বয়ে গঠিত) একটি স্বাধীন কমিটি এসব ক্রিকেটারদের নির্বাচিত করেছেন।
সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের ৮ দিনের রিমান্ড
হেলসের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে যে শাস্তি পেলেন তামিম
I don't see the logic of agitation against the High Court verdict: Prime Minister
পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি জানিয়েছেন, ‘পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে চার ক্রিকেটিং কিংবদন্তিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। যারা পিসিবির হল অব ফেমে জায়গা প্রাপ্য। পাকিস্তান ও বিশ্ব ক্রিকেটে অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য এটি তাদের এই সম্মানের প্রতীক।’বিবৃতিতে আর বলা হয়— ‘মুশতাক মোহাম্মদকে পাকিস্তানের সবচেয়ে ভালো অধিনায়কদের মধ্যে গণ্য করা হয়, চতুর ও প্রেরণামূলক নেতৃত্বের জন্য তিনি পরিচিত। ইনজামাম-উল-হক ছিলেন দারুণ প্রতিভা এবং খেলায় তার অমোচনীয় অবদান ও ম্যাচ জেতানোর দক্ষতা ছিল। পাকিস্তান দলের দুঃসময়ে নেতৃত্বের গুরুভার নিয়েছিলেন মিসবাহ-উল-হক। ক্যারিবীয় ভূমিতে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়সহ তার অধীনে টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠেছিল পাকিস্তান। যেকোনো পরিস্থিতে বিশ্বের সেরা বোলারদের বিপক্ষে সাঈদ আনোয়ারের ছিল অকৃত্রিম অনুগ্রহ ও ক্লাসিক্যাল কৌশলে ওপেনিংয়ে সফলতার নজির।’
পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা ব্যাটারদের একজন ইনজামাম। যিনি ১৯৯২ ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতিয়েছেন নিজের দেশকে। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে খেলেছেন ১২০ টেস্ট, ৩৭৮ ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। টেস্টে তার রান ৮৮৩০ এবং ওয়ানডেতে ১১ হাজার ৭৩৯ রান এসেছে এই ডানহাতি কিংবদন্তি ব্যাটারের ব্যাটে। ২০০২ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করা ৩২৯ রান পাকিস্তানের হয়ে টেস্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। তারচেয়ে মাত্র ৮ রান বেশি নিয়ে শীর্ষে অবস্থান হানিফ মোহাম্মদের।
পাকিস্তানের সাবেক ওপেনিং ব্যাটার সাঈদ আনোয়ার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ৫৫টি টেস্টে ৪০৫২ এবং ২৪৭ ওয়ানডেতে ৮৮২৪ রান করেছেন। ১৯৯৭ সালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে তার করা ১৯৪ রান ছিল ওই সময় ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।
মিসবাহ পাকিস্তানের সবচেয়ে সফল টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে ইতোমধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন। ২০১০ সালে পাকিস্তানের স্পট-ফিক্সিং কেলেঙ্কারির ঘটনায় উত্তাল সময়ে অধিনায়কত্ব নেন তিনি। তার অধীনেই ২০১৬ সালে পাকিস্তান টেস্ট ফরম্যাটের নম্বর ওয়ান দল হয়ে ওঠে। তিন ফরম্যাটেই মিসবাহ’র ব্যাটিং গড় ছিল ঈর্ষণীয়। তিনি ৭৫ টেস্টে ৫২২২, ১৬২ ওয়ানডেতে ৫১২২ এবং ৩৯ টি-টোয়েন্টিতে ৭৮৮ রান করেছেন।
এ ছাড়া মুশতাক মোহাম্মদ ১৯৫৯ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সেই পাকিস্তানের হয়ে অভিষেক টেস্ট খেলতে নামেন। যা ছিল ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিশ্ব ক্রিকেটে সর্বকনিষ্ট ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে অভিষেকের রেকর্ড। মুশতাক ১৭ বছর বয়সে করেছেন প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি, এরপর ৫৭ টেস্টে ৩৬৪৩ এবং ১০ ওয়ানডেতে ২০৯ রান করেন। তার নেতৃত্বেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথমবার টেস্টে জয় পায় পাকিস্তান।