নিজের গুনাহ বা দোষ নিজে প্রকাশ করতে নেই; বরং তা গোপন রাখা জরুরি। কারণ, মহান আল্লাহতায়ালা মানুষের দোষ গোপন রাখেন। দোষ গোপন থাকলেই পাওয়া যায় ক্ষমা ও মুক্তি। কিন্তু কোনো মানুষ যদি নিজে গুনাহ করে সে গুনাহ আবার নিজেই প্রকাশ করে দেয়, তবে আল্লাহতায়ালা তাকে ক্ষমা করেন না। বরং দোষ গোপন রাখলে মিলবে ক্ষমা ও নাজাত।
এ বিষয়ে হাদিসের একাধিক বর্ণনায় নবীজি হজরত মুহাম্মাদ (সা.) এমন ঘোষণাই দিয়েছেন—হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘আমার সব উম্মতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী ছাড়া।
মাওলানা সাদকে দেশে আসতে দিলে অন্তর্বর্তী সরকারের পতনের ডাক
Car fell on people breaking Iftar, 1 killed
৭০টি বিপদ থেকে মুক্তির দোয়া
আর নিশ্চয়ই এটা বড়ই অন্যায়, কোনো লোক রাতের বেলা অপরাধ করল, যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে সকাল হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটাল, আল্লাহ তার কর্ম (দোষ) লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার ওপর আল্লাহর দেওয়া আবরণ খুলে ফেলল’। (বুখারি, মুসলিম)
এ হাদিস থেকে জানা যায়, মহান আল্লাহতায়ালা বান্দার কোনো দোষ নিজ থেকে প্রকাশ করেন না। বরং তিনি বান্দার গোপন দোষ-ত্রুটি লুকিয়ে রাখেন। এ কারণেই নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমার উম্মতের সবাইকে ক্ষমা করা হবে; তারা ছাড়া, যারা নিজ নিজ দোষ প্রকাশ করে দেয়।
হজরত সাফওয়ান ইবনে মুহরিজ (রা.) বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি নাজওয়া’র (কেয়ামতের দিন আল্লাহ ও তার মুমিন বান্দার মধ্যে গোপন আলোচনা) ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কী বলতে শুনেছেন?
তিনি (ইবনে ওমর) বললেন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের এক ব্যক্তি তার মহান আল্লাহতায়ালার এত কাছাকাছি হবে, তিনি তার ওপর তার নিজস্ব আবরণ টেনে দিয়ে দুবার জিজ্ঞাসা করবেন—‘তুমি এই এই কাজ করেছিলে?’ সে (মুমিন ব্যক্তি) বলবেন—‘হ্যাঁ।’ আবার তিনি জিজ্ঞাসা করবেন—‘তুমি এই এই কাজ করেছিলে?’ সে বলবে—‘হ্যাঁ।’ এভাবে তিনি (আল্লাহ) তার (বান্দার) স্বীকারোক্তি গ্রহণ করবেন।
এরপর বলবেন, ‘আমি দুনিয়াতে তোমার এ গুনাহগুলো লুকিয়ে রেখেছিলাম। আজ আমি তোমার এসব গুনাহ ক্ষমা করে দিলাম।’ (বুখারি)
মহান আল্লাহ বান্দার দোষ শুধু গোপনই রাখবেন না; স্বীকারোক্তি নেওয়ার পর আবার ক্ষমাও করে দেবেন। বান্দার জন্য এর চেয়ে বড় রহমত আর কী হতে পারে!
অতএব, মুমিন-মুসলমানের উচিত, নিজেদের একান্ত গোপন দোষ-ত্রুটি প্রকাশ না করা। অপ্রকাশিত দোষগুলো গোপন রাখা। তবেই আল্লাহতায়ালা এসব গোপন দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করে দেবেন।