দেশের মাটিতে খেলতে নেমেছেন ৩৩৩ দিন পর। আড়াই মাসের ইনজুরির পর ঘরের মানুষের সামনে এবারই প্রথম। লিওনেল মেসি সেই ফেরাটাকে রাঙিয়ে রাখলেন দারুণভাবে। ঘরের মাঠে দীর্ঘদিন পর ফিরেই পেয়েছেন হ্যাটট্রিক। সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন আরও দুটি। মেসির কল্যাণে পাওয়া ৫ গোলের পর আরও একবার বল প্রতিপক্ষ বলিভিয়ার জালে বল পাঠিয়েছে।
ঘরের মাঠে প্রত্যাবর্তনের পর্বে বলিভিয়াকে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে আর্জেন্টিনা। মেসির হ্যাটট্রিকের পাশাপাশি গোল পেয়েছেন বাকি দুই স্ট্রাইকার লাউতারো মার্তিনেজ এবং হুলিয়ান আলভারেজ। অন্য গোলটা এসেছে আলভারেজের বদলি নামা থিয়াগো আলমাদার পা থেকে। ৬ গোলের এই জয়ের সুবাদে ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে কনমেবল অঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য আরও শক্ত করল আর্জেন্টিনা।
Rohit is leaving Mumbai because of Pandya
Tesla scraps low-cost car plans amid fierce Chinese EV competition
ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালানোর নির্দেশ খামেনির
লাউতারো মার্তিনেজ এবং হুলিয়ান আলভারেজকে অদলবদল করে খেলিয়েই গত দুই বছর সাফল্য পেয়েছেন আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনি। বলিভিয়ার বিপক্ষে তাদের দুজনকেই একসঙ্গে নামানো হলো। সঙ্গে ডানপ্রান্তে ছিলেন মেসি। একাধিক ইনজুরিতে জর্জর আর্জেন্টিনার রক্ষণে ছিলেন ক্রিশ্চিয়ান মেদিনা আর নিকোলাস তালিয়াফিকো। ফর্মেশন থেকেই আর্জেন্টাইন কোচের আক্রমণাত্মক দর্শন ছিল স্পষ্ট।
ম্যাচের প্রথম ৪৫ মিনিটের পরিসংখ্যানেও সেটা ছিল স্পষ্ট। পুরো প্রথমার্ধেই বলিভিয়ার রক্ষণে ছড়ি ঘুরিয়েছে আর্জেন্টিনা। ম্যাচে বল পজেশনের পাশাপাশি আক্রমণেও আর্জেন্টিনার আধিপত্য ছিল পুরোদমে। প্রথমার্ধে দুই দলের ব্যবধান হয়ে রইলেন শুধুই মেসি। এক গোলের পাশাপাশি করেছেন দুই অ্যাসিস্ট। তাতেই ম্যাচের প্রথম ৪৫ মিনিট শেষে আর্জেন্টিনা পেল ৩ গোল।
লাউতারো মার্তিনেজের পাস ধরে মেসির বা পায়ের ক্লিনিক্যাল ফিনিশে আসে ম্যাচের প্রথম গোল। ১৯ মিনিটে আর্জেন্টিনাকে এনে দেন নাম্বার টেন। সামনে থাকা ডিফেন্ডার বা কাছের পোস্টে গোলরক্ষকের ঠেকানোর সাধ্য ছিল না (১-০)। জোরালো শটে কাছের পোস্টে জাল কাঁপান মেসি। জাতীয় দলে এটি ছিল তার ১১০তম গোল। সংখ্যাটা অবশ্য আরও ২ বেড়েছে ম্যাচের শেষে।
এরপর লাউতারোর প্রতি কৃতজ্ঞতাও যেন স্বীকার করলেন ম্যাচের ৪৩ মিনিটে। পালটা আক্রমণে মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে নিজেই ঢুকে গিয়েছিলেন বক্সে। এরপরই নিঃস্বার্থ মাপা পাস দিলেন লাউতারোর দিকে। ততক্ষণে উন্মুক্ত হয়ে পড়েছে বলিভিয়ান রক্ষণের পুরোটাই। ফাঁকা পোস্টে আলতো টোকায় করেছেন স্কোর (২-০)।
প্রথমার্ধের একেবারে যোগ করা সময়ে মাঝমাঠে ফ্রিকিক পায় আর্জেন্টিনা। নিরীহদর্শন সেই জায়গা থেকেই চকিত ক্রস মেসির। অফসাইড ট্র্যাপ ভেঙেছিলেন হুলিয়ান আলভারেজ। বুক দিয়ে বল নামিয়ে জটলার মধ্যে ফিনিশ (৩-০)৷ প্রথম ৪৫ মিনিটেই স্কোরশিটে নাম তুললেন আর্জেন্টিনার ৩ স্ট্রাইকার।
৫০ মিনিটে আর্জেন্টিনার আরেকটা গোল। ফ্রিকিক থেকে বল পেয়ে ক্রস করেছিলেন এঞ্জো ফার্নান্দেজ। বলিভিয়ান ডিফেন্ডারের ওপর লাফিয়ে ওঠে গোলটাও পেয়েছিলেন আর্জেন্টিনার নিকোলাস ওতামেন্ডি। কিন্তু, বিল্ডআপের সময়েই ছিল অফসাইড। বাতিল হয় সেই গোল। এরপর ভাসকারার দুই দফায় দারুণ সেইভে গোল পায়নি আর্জেন্টিনা। ৬৯ মিনিটে গোলের খাতায় নাম লেখালেন থিয়াগো আলমাদা। ক্রিশ্চিয়ান মেদিনার পাস থেকে আলতো টোকায় দলের হালি গোল পূরণ করেন এই স্ট্রাইকার।
৮৪ আর ৮৬ মিনিটে মেসির দুই গোল দেখলে খুব একটা আলাদা করে বর্ণনা দেয়ার সাধ্য হয়ত নেই। দুইবারই ডিবক্সের খানিক বাইরে থেকে বাম পায়ের বাঁকানো শট। লোয়ার কর্নারে সেই বল দুটো ঠেকানোর উপায় ছিল না বলিভিয়ান গোলকিপারের। একবার অ্যাসিস্ট করেছেন এজাকুয়েল পালাসিওস। আর অন্যটায় অ্যাসিস্ট করেছেন নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা নিকো পাজ।
এই জয়ের পর বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে কনমেবল অঞ্চলে ১০ ম্যাচ থেকে আর্জেন্টিনার সংগ্রহ ২২ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে বলিভিয়ার অর্জন ১২ পয়েন্ট। তারা এখনো আছে ৭ নম্বরে। আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফের জায়গা পাচ্ছে তারা।