মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে 2024 সালের নির্বাচন শুরু হয়েছে, যা শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতি নির্বাচনই নয়, হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং সেনেটের গঠনও নির্ধারণ করবে। এবারের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। জরিপ দুটির মধ্যে শক্ত লড়াই দেখায় এবং নির্বাচনের ফলাফল আগামী চার বছরের জন্য আমেরিকান রাজনীতি এবং পররাষ্ট্রনীতির দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করবে।
There will be no toll booths on the road, toll will be deducted from the satellite
Mercedes will use humanoid robots in car manufacturing factories.
কেন ভারতীয় আমেরিকান ভোটারদের হারাচ্ছেন কমলা?
বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন?
এই নির্বাচনের ফলাফল বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিসের মধ্যে রাজনৈতিক মতপার্থক্য বাংলাদেশের প্রতি মার্কিন নীতিকে প্রভাবিত করতে পারে।
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আমেরিকার রাজনীতিবিদদের, বিশেষ করে ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, কমলা হ্যারিস বা ডেমোক্র্যাটরা ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্ক অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা বেশি। তারা বিশ্বাস করে যে ডেমোক্র্যাট প্রশাসন সাধারণত বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য, সহযোগিতা এবং মানবাধিকার ইস্যুতে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী।
ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কের ঝুঁকি?
এদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। ইউলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, 'ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে তিনি সম্পর্কের বর্তমান কাঠামোকে সমর্থন করবেন না, যা বাংলাদেশে মার্কিন সহায়তা কমিয়ে দিতে পারে।' মানবিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সহায়তায় ট্রাম্পের আগ্রহের অভাব বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
রোহিঙ্গা ইস্যু ও অন্যান্য সংকট
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন যে ট্রাম্প নির্বাচিত হলে রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের জন্যও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে, কারণ রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার সিংহভাগ আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। বাংলাদেশে মানবিক সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা হ্রাস পেতে পারে, যা রোহিঙ্গা শিবিরে সহায়তা প্রদানকারী দেশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
মুহাম্মদ ইউনূসের পরিচিতি
বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির মনে করেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে বিশ্বে মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ কমে যেতে পারে। বিশেষ করে 2016 সালের নির্বাচনের সময় ট্রাম্প ড. ইউনূসের মন্তব্যে রাজনৈতিক ভিন্নতা স্পষ্ট ছিল। তবে, মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, 'কমলা হ্যারিস জয়ী হলে ড. ইউনূস ইউএস-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।'
বিশ্ব রাজনীতি ও বাংলাদেশ
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ শুধু রাজনৈতিক পরিবর্তনই নয়, ভূ-রাজনৈতিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এটিকে মার্কিন আগ্রহের ক্ষেত্র করে তুলেছে। সাবেক রাষ্ট্রদূত এম. হুমায়ুন কবির বলেন, 'বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ এবং বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী হওয়ার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে।'
বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে, বিশেষ করে বাণিজ্য, সামরিক কৌশল এবং প্রযুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ সহ বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।