ইন্টারনেটে কিছু খুঁজে বের করতে গুগল ক্রোমে ভরসা রাখেন সবাই। কারণ নেট দুনিয়ার সার্চ ইঞ্জিন জগতে একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে গুগলের এই ক্রোম ব্রাউজারের (Chrome Browser)। অথচ আরও অনেক সার্চ ইঞ্জিন কিংবা ব্রাউজারই কিন্তু চালু রয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ ইউজারই সেগুলো ব্যবহার করেন না, বা করার কথা তাদের মনেও থাকে, খেয়ালেই আসে না। কিন্তু এবার এক বড়সড় পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কারণ গুগলের এই একচ্ছত্র আধিপত্য আর ভাল চোখে দেখছে না মার্কিং যুক্তরাষ্ট্রের সরকার। সেই কারণে এক বিরাট সিদ্ধান্ত উপনীত হয়েছে তারা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস প্রস্তাব এনেছে গুগলের থেকে ক্রোমকে আলাদা করে দেওয়ার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এক বিচারককে বলেছে তিনি যেন গুগলের থেকে ক্রোমকে আলাদা করে বিক্রি করে দেওয়ার নির্দেশ জারি করেন। অর্থাৎ গুগল কর্তৃপক্ষকে তাদের ক্রোম ওয়েব ব্রাউজার বিক্রি করার কথা বলা হয়েছে মার্কিং সরকারের তরফে।
AUSTRALIA LIKELY TO BAN SOCIAL MEDIA USE FOR THOSE UNDER 16
Russia hails record win for Putin in vote with no opposition
২৮ বছরে প্রথমবার কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় অংশ নিচ্ছে না বাংলাদেশ
গুগলের জনপ্রিয় ওয়েব ব্রাউজার ক্রোম বিক্রি হলে এর সম্ভাব্য মূল্য দাঁড়াতে পারে প্রায় দুই হাজার কোটি মার্কিন ডলার। ব্লুমবার্গ নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাসিক ৩০০ কোটির বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারীর কারণে ক্রোমের এমন উচ্চমূল্যায়ন করা হয়েছে।
গুগল ক্রোম ব্রাউজারের রমরমা গোটা বিশ্বেই। অ্যান্ড্রয়েড সিস্টেমের পাশাপাশি অন্য ডিভাইসেও ক্রোমের ব্যবহার বেশি। প্রতি মাসে এই সার্চ ইঞ্জিনের অ্যাক্টিভ ইউজার ৩০০ কোটির বেশি। এই বিপুল সংখ্যক গ্রাহকের জেরে বিজ্ঞাপন থেকে বিপুল আয় হয় গুগলের। কারণ অনলাইন সার্চ মার্কেটের ৯০ শতাংশ গুগলের দখলে।
কিন্তু গুগল যদি ক্রোম বিক্রিতে বাধ্য হয়, সে ক্ষেত্রে এর দাম কত উঠতে পারে, তা জানিয়েছে ব্লুমবার্গ নিউজ। গুগল ক্রোমের দাম উঠতে পারে দুই হাজার কোটি মার্কিন ডলার!
এই বিপুল দাম দিয়ে গুগল ক্রোম কেনার ক্ষমতা খুব কম সংস্থারই রয়েছে। এ বিষয়ে এক বিশ্লেষক ব্লুমবার্গকে জানিয়েছে, অ্যামাজনের মতো টেক জায়ান্ট ক্রোম কিনতে সক্ষম। আবার ক্রোম কেনার দৌড়ে ওপেনএআই অংশগ্রহণ করতে পারে বলে দাবি ওই বিশ্লেষকের। নিজেদের পরিধি বৃদ্ধিতে সার্চ ইঞ্জিন কিনতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো।
গুগল ক্রোমের রেভিনিউ নিয়ে আলাদা করে তথ্য দেয় না গুগল। গুগলের সামগ্রিক রিপোর্টে এই সংক্রান্ত তথ্য মেলে। তবে স্ট্রিম এবং বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ক্রোমের আয় যে বিপুল, তা ইউজার সংক্রান্ত তথ্য থেকেই বোঝা যায়।
সম্প্রতি কলম্বিয়া ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারক অজয় মেহতা যুগান্তকারী রায়দান করেছিলেন। গুগলের উদ্দেশ্যে একচেটিয়া ব্যবসা করা এবং অন্যান্য কোনও সংস্থাকেই সুযোগ না দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ এনে তোপ দেগেছিলেন তিনি। সেটাই হল সূত্রপাত। বিগত কয়েক বছরের একাধিক নামিদামি প্রযুক্তি সংস্থার বিরুদ্ধে 'একচ্ছত্র আধিপত্য'- এর অভিযোগ এনে তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে মার্কিং যুক্তরাষ্ট্র সরকার। সেই তালিকায় অ্যামাজন, মেটার মতো নাম রয়েছে গুগলেরও। এইসব সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ব্যবসায় একাধিপত্য রয়েছে সংস্থাগুলির। এর পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থার জন্য বাজারে ব্যবসার জায়গাই ছাড়ে না এই বড় বড় টেক জায়ান্টগুলি।
উল্লেখ্য, সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে হোক কিংবা প্রযুক্তিগত অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে একচ্ছত্র আধিপত্য, বেআইনি আচরণ এবং বাজারচলতি বাকি সংস্থাগুলিকে কার্যত ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতায় নামতে না দেওয়ার যে কার্যক্রম এতদিন গুগল চালিয়ে আসছিল তা বন্ধ করতেই ক্রোমকে বিক্রি করে আলাদ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশ কার্যকর হলে আগামী দিনে ইউজাররা আরও অনেক ওয়েব ব্রাউজার এবং সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহারের সুযোগ নিশ্চিত ভাবেই পাবেন। সেখানে কাজের ধরণও অন্যরকমের হবে বলে আশা করা হচ্ছে।