Mohin Talukder প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৬:৩০ এএম
প্রতিটি বিবেকবান ব্যক্তির একটি অনুসন্ধিৎসু মনোভাব থাকা প্রয়োজন। উন্নত চিন্তাধারা এবং পরোপকারী চিন্তা মানুষকে বিবেকবান এবং উন্নত মানুষে পরিণত করতে পারে।
তখন তার কর্ম পুণ্যে পরিণত হয়। কেউ কিছু বলল আর আপনি যাচাই না করে বিশ্বাস করলেন, সেটাও পাপ। কাউকে সন্দেহ করার আগে যাচাই করে নেওয়া উচিত। পক্ষান্তরে, ভালো-মন্দ বিবেচনা না করে কৌতুহল কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। এই শ্রেণির মানুষ বিদ্বেষ ও শত্রুতার ভিত্তিতে সমাজ গড়ে তোলে মন্দ ধারণা নিয়ে। কু-ধারণার মাধ্যমে মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধ ধ্বংস হয়। নানা অন্যায় ও অপকর্মে জড়িয়ে পড়তে হয়। তখন এর সাথে জড়িতরা গুনাহগার হয়ে যায়। সেজন্য আপনাকে ভালো চিন্তা নিয়ে চলতে হবে, কখনো খারাপ চিন্তা বা খারাপ চিন্তা করবেন না। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, 'হে ঈমানদারগণ! অতিরিক্ত চিন্তা করা থেকে দূরে থাকুন; কারণ অনুমান করা কিছু ক্ষেত্রে পাপ এবং আপনি একে অপরের গোপনীয়তা সম্পর্কে অনুসন্ধান করেন না।
একে অপরের সাথে প্রতারণা করবেন না। তোমাদের কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খাবে?' - সূরা হুজরাত: 12 অন্যায়ের জন্ম হয় অতিরিক্ত চিন্তা ও মন্দ চিন্তা থেকে। মানুষ অনেক ক্ষেত্রে ভালো ধারণার চেয়ে খারাপকে অগ্রাধিকার দিতে পছন্দ করে। অন্যের ইজ্জত রক্ষা না করে নিজের লাভ খোঁজে। পবিত্র কোরআন স্পষ্টভাবে মুসলমানদের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার নির্দেশের সাথে অন্যের অনুমান ও কুসংস্কারকে নিষেধ করেছে। একে অপরের প্রতি ভাল ধারণা তৈরি করতে এবং সন্দেহ থেকে দূরে থাকতে বলা হয়। আমরা প্রায়ই ক্ষেত্র, মঞ্চে, টেবিলে ধারণা সম্পর্কে কথা বলি। আমি আমার অহংকে রক্ষা করার চেষ্টা করি এবং মিথ্যা এবং কাল্পনিক বাগ্মিতা ব্যবহার করে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করি। তবে পবিত্র কোরআনে মনের মধ্যে খারাপ চিন্তা করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে এবং এ ধরনের খারাপ চিন্তার কারণে অন্যের বিরুদ্ধে কিছু বলা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'ধারণা থেকে সাবধান। কারণ ধারণাগত কথা বলাই সবচেয়ে বড় মিথ্যা। একে অপরের দোষ খুঁজো না এবং একে অপরের বিরুদ্ধে শত্রুতা ও শত্রুতা পোষণ করো না; পরিবর্তে, ভাই হন।
- বোখারী শরীফ হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, 'তোমাদের কেউ যখন তার মুসলিম ভাইয়ের কাছে যায়, তখন সে যেন তার খাবার থেকে খায় এবং তার পানীয় থেকে পান করে এবং জিজ্ঞাসা না করে। ’ -বায়হাকী ও মিশকাত আমাদের সামাজিক জীবনে পারস্পরিক আন্তরিকতা বজায় রাখতে হবে। অহেতুক সন্দেহ পরিহার করতে হবে। ইসলামে এটা শুধু নিরুৎসাহিতই নয়, কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। অনুমান এবং গুজবের উপর ভিত্তি করে দুর্ঘটনার অনেক উদাহরণ রয়েছে। শোনা কথার সত্যতা যাচাই না করে অন্যায় শাস্তি বা শাস্তির নামে নির্যাতন ও মানহানির মামলাও রয়েছে। আর এভাবেই চলছে ব্যক্তিগত লাভের অপকর্ম। চলছে দলাদলি ও সমাজ বিভাজনের তৎপরতা। মুসলমান হিসেবে আমাদের কর্তব্য হতে হবে পারস্পরিক সম্পর্ক মজবুত রাখা এবং ইসলামি ভ্রাতৃত্ববোধকে মজবুত রাখা এবং মন্দ ধারণা থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখা এবং সত্য যাচাই না করে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ বিশ্বাস না করা।
তাছাড়া সবার সাথে হাসিমুখ, পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন মনে কথা বলা ও দেখা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। মানুষের প্রতি ভালো দৃষ্টিভঙ্গি থাকা এবং অন্যের কাজকে ভালো ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে দেখা দরকার। কাজ দেখার আগে যদি খারাপ ধারণা তৈরি হয়, তাহলে ভালো কাজ মন থেকে সরে যায়। সততা ও সত্যবাদিতার বাহ্যিক রূপকে ভুল ধারণা করা ঠিক নয়। তবে কারো মধ্যে যদি সুস্পষ্ট অন্যায় ও অসত্য থেকে থাকে, তার স্বভাব ভালো না হয় এবং সে ব্যাপারে সমাজে তার বদনাম থাকে, তাহলে খারাপ ধারণা পোষণ করা ভুল হবে না। তাই আসুন, ঈশ্বরের সতর্কবার্তার মাধ্যমে অজানা বিষয়কে সত্য ভেবে মানুষের সম্পর্কে ভুল ধারণা থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করি। আসুন সন্দেহজনক মানসিকতা থেকে নিজেকে মুক্ত করি এবং সুন্দর চরিত্রের জন্য চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের হেদায়েত করুন। আমীন।