Dhaka, শুক্রবার, ডিসেম্বর ২০, ২০২৪
logo

কর্মস্থলে না ফেরা ‘অপরাধী’ কর্মকর্তাদের খুঁজছে পুলিশ


Siam Islam   প্রকাশিত:  ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৩:১৯ পিএম

কর্মস্থলে না ফেরা ‘অপরাধী’ কর্মকর্তাদের খুঁজছে পুলিশ

শিক্ষার্থীদের ওপর বলপ্রয়োগের জন্য বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে সরকার বাধ্যতামূলকভাবে অবসর দিয়েছে। এরপর তাদের কয়েকজনকে আটক করা হয়। তবে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের অনেকেই ৫ আগস্টের পর আর দায়িত্বে ফেরেননি। তারা এখনও পলাতক রয়েছেন।

পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দফতরের আল্টিমেটাম সত্ত্বেও অনেক প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তা এখনো কাজে যোগ দেননি। পলাতক বা অপরাধী হিসেবে আত্মগোপনে থাকা এসব কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের জন্য তল্লাশি শুরু হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কথায়ও সেই আভাস পাওয়া যায়। গতকাল আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে তিনি বলেন, যেসব পুলিশ সদস্য এখনো যোগ দেননি তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

আমরা তাদের পুলিশ বলব না, অপরাধী বলব।

পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের ১৮৭ জন সদস্য এখনো কর্মস্থলে যোগদান করেননি। এ ছাড়া নানা কৌশল ও কারণে অনেক পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে অনুপস্থিত। ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলি ও হত্যার অভিযোগে সারাদেশে তিন সাবেক আইজিসহ পুলিশের ১৮৪ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

এর মধ্যে ডিএমপির ৯৯ জন।
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, যেসব কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন না করে পলাতক বা পলাতক থাকেন তাদের অপরাধী হিসেবে দেখা হয়। তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যারা কাজে ফিরতে পারবেন না তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলার তদন্ত ও বিচার আইন অনুযায়ী চলবে। যাদের সামান্যতম সংযোগ আছে তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

অন্যদিকে চাকরিচ্যুত পুলিশ কর্মকর্তা, প্রাক্তন কর্মকর্তা এবং দুর্নীতি, খুন, নির্যাতন ইত্যাদির কারণে যোগদান না করে আত্মগোপনে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নতুন নতুন মামলা করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (অপারেশন্স) রেজাউল করিম বলেন, ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যাদের পাওয়া গেছে তাদের হেফাজতে নেওয়া হচ্ছে।

অ্যাকশনে ফিরে না গিয়ে পলাতক তালিকার শীর্ষে হারান

পলাতক পুলিশ কর্মকর্তাদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ, ৩৮টি মামলার আসামি। তাকে এখনো বরখাস্ত করা হয়নি। পলাতক হিসেবে পুলিশ সদর দফতরের তালিকায় এক নম্বরে রয়েছেন হারুন।

নিরাপত্তার অজুহাতে আন্দোলনের সমন্বয়কদের ডিবি কার্যালয়ে আটকে রাখায় আরও সমালোচনার মুখে পড়েন হারুন। ৫ আগস্টের পর তাকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি।


আওয়ামী লীগ সরকার তার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অকাট্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও ২০১১ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ বিএনপি নেতা জয়নুল আবদিন ফারুককে পুনর্বাসন ও পদোন্নতি দিয়েছে। ১৩ বছর পর গত ১৯ আগস্ট হারুনের বিরুদ্ধে ডিএমপির শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন বিএনপি নেতা ফারুক।

বিপ্লব কোথায়?

গত ১২ সেপ্টেম্বর গণমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে- ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার অবৈধভাবে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম ইউনিয়ন সীমান্ত অতিক্রম করেছেন। দাবি করা হয় যে তিনি 10 সেপ্টেম্বর রাতে কোনো এক সময়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। পাচারকারীদের কিছু কথোপকথনের অডিও রেকর্ডিং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করা হয়েছে। সীমান্ত পাড়ি দিতে বিপ্লব কুমারের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা নেওয়া হয় বলেও জানা গেছে।

দ্রুত

এ প্রসঙ্গে এসবির প্রধান মো. শাহ আলম সাংবাদিকদের বলেন, দুই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা ছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সাবেক বা বর্তমান কোনো পুলিশ কর্মকর্তা ইমিগ্রেশন পার হননি। আমার মনে হয় তারা দেশেই আছে। তবে আপনি কোথায় আছেন তা নিয়ে মন্তব্য করব না।

গোলাম ফারুক দেশ ছাড়তে ব্যর্থ হয়েছেন:

ডিএমপির সাবেক কমিশনার গোলাম ফারুক গত ২০ আগস্ট ব্যাংককের উদ্দেশে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান। ডিবি তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি অবহিত করে এবং তাকে দেশত্যাগে আপত্তি জানায়। পরে অবশ্য বিমানবন্দর থেকে দেশে ফেরেন তিনি। খন্দকার গোলাম ফারুকের বিরুদ্ধে ডিএমপির কোতয়ালী থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা রয়েছে।

পুলিশ সদর দফতরের দেওয়া কর্মস্থলে যোগদান না করা ১৮৭ সদস্যের তালিকার মধ্যে ডিআইজি থেকে সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ১৬ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। পাঁচজন পুলিশ ইন্সপেক্টর, ১৪ জন সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) পদমর্যাদার কর্মকর্তা রয়েছেন। অন্যদের মধ্যে এএসআই 9, নায়েক 7 এবং কনস্টেবল 136 জন।


কাজে যোগদান না করা শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মনিরুজ্জামান (স্বেচ্ছায় অবসরের আবেদন), ডিএমপির সাবেক যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, ডিবির সাবেক যুগ্ম কমিশনার খোন্দকার নুরুন্নবী, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার এসএম মেহেদী হাসান, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরপিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার উত্তম কুমার পাল এবং পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. বিভাগীয় প্রলয় কুমার