নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৮:৫৮ পিএম
মনিরুজ্জামান মনির শেরপুর জেলা প্রতিনিধি: উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল আর টানা বৃষ্টিতে শেরপুরে ভয়াবহ বন্যায় আরো নতুন করে ২ উপজেলা সহ ৫ উপজেলার দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে শেরপুর জেলার শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী সহ নতুন করে যুক্ত হয়েছে নকলা ও শেরপুর সদর উপজেলা। এসব এলাকায় কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। বন্যায় গত ২দিনে দুই সহোদর ভাইসহ ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ভারী বর্ষণ ও অতিবৃষ্টিতে - উপজেলার নন্নী ইউনিয়নের অভয়পুর গ্রামের মৃত বাছির উদ্দিনের ছেলে হাতেম আলী (৩০) ও আলমগীর হোসেন (১৬)। এর আগে, গত শুক্রবার মারা যান তিনজন। তারা হলেন- নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবীল ইউনিয়নের ইদ্রিস আলী (৬৫), পোড়াগাঁও ইউনিয়নের জহুরা খাতুন (৭০) ও বাঘবেড় ইউনিয়নের অমিজা খাতুন (৪৫) এবং বাকি দুই জনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়রা জানান, জেলার শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী, নকলা ও শেরপুর সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের অবস্থা বেশি খারাপ। বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে শত শত পুকুরের মাছ, কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছগাছালি, গবাদি পশু, বিধ্বস্ত হয়েছে কয়েকটি মহাসড়কসহ অসংখ্য গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়ক। কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অনেক এলাকা। সংকট তৈরি হয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির।
নালিতাবাড়ী থানার ওসি ছানোয়ার হোসেন বলেন, আমরা চারজনের পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছি। বাকি ৩ জনের পরিচয় জানা যায়নি।
এদিকে বানভাসি মানুষকে উদ্ধারে শুক্রবার থেকেই কাজ করছে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, বিজিবি ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। শনিবার দিনভর স্পিডবোট, নৌকা, ভেলা, টিউব ইত্যাদি নিয়ে চলে বন্যায় আটকেপড়াদের উদ্ধার অভিযান। এছাড়াও শুকনা খাবারসহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে বানভাসিদের মাঝে। এসব কাজে অংশ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।
শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রবিবার জেলার ভোগাই নদীর নাকুগাঁও পয়েন্টে পানি ১ সেন্টিমিটার, নালিতাবাড়ী পয়েন্টে ৪৮ সেন্টিমিটার এবং চেল্লাখালীর ২৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়াও অপর দুটি পাহাড়ি নদী মহারশি ও সোমেশ্বরীর পানি এখনও বিপৎসীমার সমান রয়েছে। পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ব্রহ্মপুত্র, মৃগী ও দশানী নদীর।তবে আগামীকাল সোমবারের ভেতর কমবে সব নদীর পানি, উন্নতি হবে বন্যা পরিস্থিতির।
জেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ পর্যন্ত জেলার সাড়ে ৩৫ হাজার হেক্টর জমির আমন ধানের আবাদ পানিতে তলিয়ে গেছে। সাড়ে ৯ শ হেক্টর জমির সবজির আবাদ পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।
শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, বন্যা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে বন্যার্তদের শুকনো খাবার ও গো খাদ্যের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
প্রেরক-মনিরুজ্জামান মনির
শেরপুর জেলা প্রতিনিধি