Dhaka, শুক্রবার, ডিসেম্বর ২০, ২০২৪
logo

পদ্মায় অবৈধ ইলিশ সম্পদ রক্ষায় আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন-  জেলা মৎস্য দপ্তরের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন)


নিজস্ব প্রতিবেদক   প্রকাশিত:  ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১:১১ পিএম

পদ্মায় অবৈধ ইলিশ সম্পদ রক্ষায় আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন-  জেলা মৎস্য দপ্তরের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন)

 

ভারতের গঙ্গা এদেশের পদ্মা নদী। মূলত “মা” ইলিশ ডিম ছাড়তেই  লোনা পানি থেকে মিঠা পানিতে আসে। বিভিন্ন কৃত্রিম প্রতিবন্ধকতার কারনে পূর্বের ন্যায় রাজশাহীর পদ্মায় আর ইলিশ মাছের দেখা মিলে না। নদীতে সময় ও অসময়ে পানির শূন্যতা এবং নদীর নাব্যতাও একটি বড় কারন। রাজশাহীতে প্রায় ১৩১ কিঃ মিঃ জুড়ে পদ্মা নদী মৎস্য উৎপাদনের এলাকা হিসাবে নিয়ন্ত্রণ করছেন মৎস্য অধিদপ্তর। প্রতিনিয়ত ভারতের জেলেরা ইলিশ শিকার করে তাদের সীমানায় পালিয়ে যাচ্ছে। ইলিশ সম্পদ রক্ষায় আন্তজার্িিতক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিভিন্ন মহল।    

মৎস্য বিশেষজ্ঞদের মতে শুধু মাত্র “মা” ইলিশের ডিম ছাড়ার সময় মিঠা পানিতে আসে। একটি ইলিশ একবার প্রায় ১৫ লক্ষ ডিম দেয়। ওই সময় মৎস্য নিধন থেকে বিরত থাকতে হবে। ইলিশ একটি জাতিয় সম্পদ। এই মাছ বিদেশে রপ্তানী করে অনেক বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করছে। ইলিশ রক্ষায় নদী রক্ষা করতে হবে। বিভিন্ন কল কারখানার নির্গত বর্জ, বিকল্প নৌযানসহ দৈনন্দিন প্লাস্টিক পন্য ও পলিথিন নদীর পানি নষ্ট হচ্ছে। যা ইলিশসহ না না প্রজাতির মাছ উৎপাদনে বড় বাধা।        
 
জেলার গোদাগাড়ী, পবা ও জেলা সিটি কর্পোরেশন, চারঘাট ও বাঘা উপজেলা পদ্মার তীরবর্তী এলাকা। ভারত ও বাংলাদেশের পদ্মা নদীই দুই দেশের অন্তর। প্রতি বছর “মা” ইলিশ গভির সমুদ্র লোনা পানি থেকে ডিম ছাড়তেই মিঠা পানিতে আসে। তবে নদীতে পানির স্বল্পতা এবং নাব্যতার কারনে ইলিশের ফলন প্রতিনিয়ত কমে যাচ্ছে। গোদাগাড়ী উপজেলা মৎস্য অফিসার ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, এই উপজেলায় ২৫কিঃ মিঃ জলমহল মৎস্য দপ্তর নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রতিনিয়ত মনিটরিংসহ পুলিশের সহযোগিতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। এই এলাকায় ভারতের জেলেদের তেমন কোন মৎস্য শিকার  করতে দেখা যায় না।      

পবা  উপজেলা মৎস্য অফিসার আশাদুজ্জামান জানান, সিটি কর্পোরেশন ও পবা উপজেলা মিলে প্রায় ৫০ কিঃ মিঃ জলমহল রয়েছে। তবে এই এলাকায় ইলিশের দেখা মিলে না। বর্তমান এই নদীতে “মা” ইলিশ ডিম ছাড়তে আসে না। পূর্ব থেকে কিছু মাছ নদীতে রয়েছে। সেগুলো থেকেই অল্প পরিসরে ইলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে বলে তিনি ধারনা করছেন। চারঘাট-বাঘা উপজেলা দায়িত্বরত কৃষি অফিসার ওয়ালি উল্লাহ মোল্লাহ এই পত্রিকার প্রতিনিধিকে জানান, দুই উপজেলায় ৪৬ কিঃ মিঃ নদী এলাকা রয়েছে। জেলার অন্যান্য এলাকার চেয়ে চারঘাট-বাঘায় নদীর গভিরতা বেশি। যার কারনে মাছের পরিমানও বেশি। কিন্ত ভারতের জেলেদের কারনে দেশের ইলিশ সম্পদ ধ্বংস হচ্ছে। মৎস্য দপ্তরের লজিস্টিক সমস্যার কারনে অবৈধ মৎস্য নিধন বন্ধ করা যাচ্ছে না। 

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) আমেনা বেগম গত ২৩ থেকে ২৫ অক্টোবর তিন দিন জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। তিনি জেলার মৎস্য দপ্তরের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। পরে তিনি জেলার নগরপাড়া জেলেপল্লীর জেলেদের সাথে মতবিনিময় সভা শেষে পদ্মা নদীতে “মা” ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। ওই সময় নদীতে প্রাপ্ত অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ ও ধ্বংস করা হয়। উক্ত মতবিনিময় সভায় জেলেসহ অন্যান্য অংশীজনদের নিকট মতামত গ্রহণপূর্বক নদীতে মাছ সংরক্ষণের পাশাপাশি জেলেদের জীবনমান উন্নয়নের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার বিষয়টি প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে তুলে ধরেন।

মৎস্য অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে রাজশাহী বিভাগের বিভাগীয় মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ ওয়াহেদ মন্ডল, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, চারঘট নির্বাহী অফিসারের পক্ষে সহকারী কমিশনার(ভূমি) আরিফ হোসেন। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা, নৌ পুলিশের অফিসার ইন-চার্জবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

 
ওবায়দুর ইসলাম রবি, রাজশাহী