নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৬:১৬ এএম
মনিরুজ্জামান মনির শেরপুর জেলা প্রতিনিধি : শেরপুরে ৪৪ তম ভৌগলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে তুলশীমালা চালের পর এবার ঐতিহ্যবাহী ছানার পায়েস স্বীকৃতি পেয়েছে। আজ ৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান জিআই স্বীকৃতি অর্জনের বিষয়টি সাংবাদিকদের সাথে প্রকাশ করার পর শহরজুড়ে আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে।
এ উপলক্ষে সাধারণ মানুষের মাঝে ছানার পায়েস বিতরণ করেছে জেলা ব্র্যান্ডিং ওয়েবসাইট 'আওয়ার শেরপুর'।
আওয়ার শেরপুর এর প্রতিষ্ঠাতা ও স্বত্বাধিকারী মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন, "ছানার পায়েস শেরপুরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অংশ। জিআই পণ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় আমরা আনন্দিত। এটি শেরপুরে ব্র্যান্ডিং ও ঐতিহ্য আরও বহুদূর নিয়ে যাবে।"
এ বিষয়ে শেরপুর শহরের রঘুনাথ বাজার মহল্লার অনুরাধা মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী বাপ্পি দে জানায়, শেরপুরের প্রশাসন, সাংবাদিক, সুধি মহল থেকে শুরু করে সর্ব মহলের সহযোগীতায় আজ শেরপুরে তুলশীমালা চালের পর দ্বিতীয় জিআই পণ্য হিসেবে ঐতিহ্যবাহী ছানার পায়েস জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় শেরপুরের অর্থনৈতিক খাত চাঙ্গা হওয়ার পাশাপাশি দেশ ও দেশের বাইরে শেরপুরের সুনামও ছড়িয়ে পড়বে বলে আমি মনে করি।
জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, "দেশের ৪৪তম জিআই পণ্যের মর্যাদা অর্জন করেছে শেরপুরের ছানার পায়েস। আমরা আজকেই সনদের কপি হাতে পেয়েছি। জিআই পণ্য হওয়ার কারণে তা সারাদেশে ছড়িয়ে যাবে।" তিনি আরও বলেন, "শেরপুরের সম্ভাবনায় অন্যান্য সকল পণ্যের জিআই স্বীকৃতি চেয়ে প্রস্তাব করা হবে শীঘ্রই।"
উল্লেখ্য, শেরপুরের ছানার পায়েসের ঐতিহ্য শত বছরের পুরোনো। ব্রিটিশ আমলে এই মিষ্টি প্রথম তৈরি হয় শেরপুরের গোয়ালপট্টিতে। তখন হাতে গোনা দু-একটি দোকানে এই মিষ্টি হতো। এখন জেলা সদরেই অন্তত ২০টি দোকানে ছানার পায়েস হচ্ছে। এসব দোকানে প্রতিদিন গড়ে বিক্রি হয় প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ কেজি ছানার পায়েস। শেরপুর শহরের বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে প্রতি কেজি ছানার পায়েস প্রকার ভেদে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়। জেলার ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী, নকলা ও নালিতাবাড়ী উপজেলাতেও পাওয়া যায় এই মিষ্টি। এই ছানার পায়েস জেলা এবং জেলার বাইরের বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনদের বাসায় বেড়াতে গেলে অথবা বিয়ে, জন্মদিন, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, দুর্গাপূজাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব ও যেকোনো অনুষ্ঠানে আপ্যায়নের জন্য শেরপুরের মানুষের কাছে পছন্দের মিষ্টি ছানার পায়েস।