নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৬:১৭ এএম
গত ২০ বছরে নিজেদের মধ্যে বেশ শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। এই সময়ে কূটনীতি, রাজনীতি, ব্যবসা থেকে শুরু করে সামরিক ক্ষেত্রেও দেশ দুটি সম্পর্ক জোরদার করেছে। মূলত এশিয়ায় চীনের আধিপত্য ঠেকাতেই রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের প্রথাগত সুসম্পর্ক সত্ত্বেও নয়াদিল্লির সঙ্গে এই কৌশলগত সম্পর্ক রেখেছে ওয়াশিংটন। তবে এবার সেই ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি। দলটির অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ডিপ স্টেট উপাদানগুলো ভারতকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এই কাজে তারা অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের একটি সংগঠন ও বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে আঁতাত করছে। খবর রয়টার্সের।
বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) বিজেপি জানায়, মোদিকে ঘায়েল করতে কংগ্রেস অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি)-এর প্রতিবেদন ব্যবহার করে। এসব প্রতিবেদনে শুধু আদানি গ্রুপ ও মোদি সরকারের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠতাকে নিশানা করে করা হয়।
গত মাসে ২৬৫ বিলিয়ন ডলারের ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি এবং আরও সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এমনকি আদানির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পর্যন্ত জারি করা হয়েছে। যদিও এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছে আদানি গ্রুপ।
এ ছাড়া ওসিসিআরপি জানিয়েছিল, ভারতের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত হ্যাকাররা ইসরায়েলি পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে সরকারবিরোধী সমালোচকদের টার্গেট করেছে। এই অভিযোগও আগেই অস্বীকার করেছে মোদি সরকার। এর আগেও মোদির সমালোচনার জন্য রাহুল, ওসিসিআরপি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ৯২ বছর বয়সী বিলিয়নিয়ার জর্জ সোরোসকে দায়ী করেছিল বিজেপি।
সবশেষ বৃহস্পতিবার একটি ফরাসি মিডিয়ার প্রতিবেদনের বরাতে বিজেপি দাবি করে, ওসিসিআরপি-এর অর্থায়নের ৫০ শতাংশ সরাসরি মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সোরোসের মতো ডিপ স্টেট ব্যক্তিদের কাছ থেকে আসে। মোদিকে টার্গেট করে ভারতকে অস্থিতিশীল করার সুস্পষ্ট লক্ষ্য রয়েছে ডিপ স্টেট-এর। পরে একই দিন দলের একটি আনুষ্ঠানিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে একই অভিযোগ করেন বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র ও সংসদ সদস্য সম্বিত পাত্র।
এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইউএসএইড, সোরোস এবং কংগ্রেস পার্টি তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। বিজেপির অভিযোগ নিয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
তবে এক বিবৃতিতে ওসিসিআরপি বলেছে, এটি একটি স্বাধীন মিডিয়া আউটলেট এবং কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নয়। মার্কিন সরকার কিছু অর্থায়ন করলেও তাদের সম্পাদকীয় নীতি ও প্রতিবেদনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাব নেই।