Dhaka, শনিবার, মার্চ ১৫, ২০২৫
logo

ঝুকিপূর্ণ ভূঞাপুর থানা ভবনে মরণ আতঙ্কে পুলিশ সদস্যরা!


নিজস্ব প্রতিবেদক   প্রকাশিত:  ১৫ মার্চ, ২০২৫, ০৭:৩৪ এএম

ঝুকিপূর্ণ ভূঞাপুর থানা ভবনে মরণ আতঙ্কে পুলিশ সদস্যরা!

 

হাদী চকদার, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী যখন মানবিক পুলিশ হিসেবে সারাদেশের মানুষের নিরাপত্তা প্রদানে সর্বদা কাজ করে যাচ্ছেন। ঠিক তখনই টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থানার পুরাতন জরাজীর্ণ ভবনে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আতঙ্কের মধ্যদিয়ে কাজ-কর্ম করছেন সেই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। 

বিগত ১৯৭৪ সালে থানা গঠন হওয়ার পরে ১৯৮৩ সালে প্রথমবার ভূঞাপুর থানায় একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ হয়। তারপর উল্লেখযোগ্য কোন উন্নয়ন হয়নি এই থানায়। মূল গেট দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে থানা চত্বরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও ফুল বাগানের সৌন্দর্য। সেই সাথে দুই তলা ভবনের বাইরের অংশের নতুন রঙ দেখে ভালোই লাগবে। কিন্তু ভবনের ভিতরে প্রবেশ করতেই মনে হবে-‘বাইরে ফিটফাট আর ভিতরে সদরঘাট'।

সরেজমিনে দেখা যায়, পুরাতন এ ভবনটিতে খোদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও ইন্সপেক্টর (তদন্ত) এর কক্ষেই ফাটল। ভবনের দোতলায় পুলিশ বেরাক, নিচতলায় সার্ভিস ডেস্ক, অপারেটর কক্ষ, অস্ত্রাগার, হাজতখানা ও অফিসাররা যেসব কক্ষে বসে কাজ করেন সেগুলোর অবস্থা আরও বেশি নাজুক। ভবনটির কলাম, ভীম ও ছাদের পলেস্তারা খুলে পড়ে রড বেরিয়ে পরেছে। তাতেও আবার ধরেছে মরিচা। এছাড়াও দেয়ালজুড়ে বড় বড় ফাটল ও পলেস্তারা খসে ইটও বেরিয়ে পড়েছে। যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। 

এছাড়াও মূল ভবনের পাশেই থানার ওসির বাসভবন, পাশেই আরেকটি আবাসিক ভবন। সেগুলোও অনেক পুরাতন জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। কোন রকম সংস্কার করে বর্তমানে ব্যবহার করা হচ্ছে। 

পুলিশ সদস্য মোঃ খয়বর আলম বলেন, ভবনটি অনেক পুরাতন বৃষ্টির সময় ভিতরে পানি ঢুকে। ভবনের ভিতর কয়েকজন একসাথে হাটলেই পুরো ভবন কেঁপে ওঠে। আমরা ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় থানার ভিতর ডিউটি করি।

পুলিশ সদস্য সাদ্দাম হোসেন বলেন, রাতে ঘুমানের সময় ও দিনে কাজের সময় মাঝে মধ্যেই ছাদের পলেস্তারা খুলে পড়ে। আমরা খুব কষ্টে দিন পার করছি ও আতঙ্কে থাকি কখন যে ছাদ ধ্বসে উপরে পড়ে। নতুন ভবন নির্মাণ হলে পুলিশ সদস্যরা উপকৃত হবে। 

পুলিশ সদস্য জলিল খান বলেন, সব সময় থানার ভিতরে মরণ আতঙ্কে থাকি। কখন যে ভবনটি ধ্বসে পড়ে ঠিক নেই। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের দাবী জানাই। 

থানা অফিসার ইনচার্জ একেএম রেজাউল করিম বলেন, থানা ভবনটি একদম ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য লিখিতভাবে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার ও উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। 

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলাম সানতু বলেন, ঝুকিপূর্ণ ভূঞাপুর থানা ভবন আমি নিজে গিয়ে দেখেছি। এ বিষয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে কথা বলেছি। তারা কিছুদিনের মধ্যেই প্রয়োজনীয় সংস্কার করা দিবেন এবং আগামী বর্ষার আগেই নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হবে। ১ম পর্যায়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় কাজ হচ্ছে এবং ২য় পর্যায়ে ভূঞাপুর থানায় নতুন ভবন নির্মাণ হবে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে ভূঞাপুর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), ইন্সপেক্টর (তদন্ত), উপ-পরিদর্শক (এসআই), সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ও কনস্টেবলসহ মোট ৬০ জন পুলিশ সদস্য থানা ভবনের নিচতলায় অবস্থান করে তাদের দায়িত্ব পালন করেন। দ্বিতীয় তলার ব্যারাকে ৩০/৪০ জন রাত্রিযাপন করেন।