Dhaka, শনিবার, জানুয়ারী ১১, ২০২৫
logo

হাসিনার পরিবার প্রতিটি জায়গায় সিন্ডিকেট বসিয়েছে : সারজিস


নিজস্ব প্রতিবেদক   প্রকাশিত:  ১০ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৯:৪১ পিএম

হাসিনার পরিবার প্রতিটি জায়গায় সিন্ডিকেট বসিয়েছে : সারজিস

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, খুনি হাসিনা প্রতিটি জায়গায় গোপালগঞ্জের সিন্ডিকেট বসিয়েছে। তার পরিবার প্রতিটি জায়গায় সিন্ডিকেট বসিয়েছে, সেগুলো শেষ করে প্রতিটি জায়গায় একটি সমতার সিস্টেম চাই। 

 

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে ভোলা জেলা শহরের সরকারি স্কুল খেলার মাঠ সংলগ্ন ইলিশ ফোয়ারা চত্বরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বীরের জেলা ভোলা। এ জেলার বীর শহীদরা তাদের জীবন দিয়ে এ অভ্যুত্থান সফল করেছে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এ দেশের ফ্যাসিস্টবিরোধী সকল দলমত, শ্রেণি, ধর্মের মানুষ লড়াই করেছি। আমরা এই বাংলাদেশের রাজনীতিতে এমন একটি ধারা দেখেছি যে ধারায় শুধু যখন ভোটের প্রয়োজন হত তখন অনেকে জননেতা সেজে জনগণের কাছে আসতো। কিন্তু গত ১৬ বছরে খুনি হাসিনা সেই ভোটের প্রয়োজনীয়তাও রাখেনি।

সারজিস আলম বলেন, আমরা চিন্তা করছি অভ্যুত্থানের যে স্পিরিটকে সামনে রেখে রক্ত ও জীবন দিয়েছি, বাংলাদেশকে নিয়ে যেসব স্বপ্ন ধারণ করি সেই স্বপ্নগুলো একটি ঘোষণাপত্রে থাকার প্রয়োজন। কিন্তু ঘোষণাপত্রে যেসব কথা থাকবে তা যেন কয়েকজনের কথা না হয়, সেটি যেন হয় প্রত্যেকটি শ্রেণি-পেশার মানুষের কথা।

সমাবেশে ভোলা-বরিশাল সেতু, ভোলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন, ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগের জন্য উত্থাপিত দাবির সঙ্গে একাত্ত্বতা প্রকাশ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে সারজিস বলেন, ভোলায় উত্থাপিত গ্যাস কেন ভোলার মানুষ পাবে না? ভোলার মানুষ উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল যেতে যেতেই মারা যায়, তাহলে ভোলায় কেন মেডিকেল কলেজ হবে না? পদ্মা সেতু ও পদ্মা সেতুর রেলসেতু নির্মাণে ৭০ হাজার কোটি টাকা খরচ হলে সম্ভাবনাময় ভোলার জন্য, ভোলা-বরিশাল সেতুর জন্য সরকার কেন টাকা খরচ করবে না। ভোলার গ্যাস যেন ব্যাবসায়িক উদ্দেশ্য ভোলা থেকে না নিয়ে যেতে পারে সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বানও জানান তিনি।

সমাবেশে সারজিস আরও বলেন, বাংলাদেশের যে জায়গাগুলোতে চাঁদাবাজি হয় তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে সক্রিয় হতে হবে। সাদাকে সাদা, কালোকে কালো ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার থাকার আহ্বান জানান তিনি।

সমাবেশে জাতীয় জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, এ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ছাত্র-জনতার যে অদ্ভুত মিশেল আমরা লক্ষ করেছি, এটি পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে গত ১৫ বছর না পাওয়ার বেদনাসহ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ না হওয়া সব একত্রিত হয়ে এ অভ্যুত্থানে সকলের মাঝে সঞ্চারিত হয়েছে। ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের শক্তি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ শিক্ষার্থীরাই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে এ আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে। আমরা আমাদের দেশের তরুণদের পার্লামেন্টে দেখতে চাই। ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে এসকল তরুণদের একটি সেলফ সিকিউরিটি দেওয়া সম্ভব। সরকারিভাবে শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়াসহ অভ্যুত্থানের সকল ইতিহাস সকল পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিও জানান তিনি।

এর আগে এদিন বেলা ১১টার দিকে সারজিস আলম ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যরা ভোলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট ভোলায় নিহত শহীদ জসিম উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সহানুভূতি জানান। পরে জসিম উদ্দিনের কবর জিয়ারত করেন তারা।

পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ‘জুলাইয়ের প্রেরণা, দিতে হবে ঘোষণা’-স্লোগানে সাতটি বিষয় ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে ভোলা জেলা শহরের বাংলাস্কুলের সামনে থেকে শুরু করে জেলার শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে সাধারণ মানুষের কাছে লিফলেট বিতরণ করেন এবং সাধারণ মানুষের মতামত শুনেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা-কর্মীরা।

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভোলা জেলার সমন্বয়করা উপস্থিত ছিলেন।