এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসার জন্য অনেক বাংলাদেশিই ঝুঁকছেন থাইল্যান্ড-চীনের দিকে। এরই মধ্যে চিকিৎসা সেবা নিতে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ইউনানে গিয়েছেন বেশকিছু বাংলাদেশি। বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বাংলাদেশি এক কূটনীতিক তথ্যটির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, যখন কোথাও শূন্যতা সৃষ্টি হয়, তখন স্বয়ংক্রিয়ভাবেই অন্যকিছু দিয়ে তা পূরণ হয়। মানুষ প্রতিনিয়ত বিকল্প খোঁজে।
এশিয়ার পরাশক্তি চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও একই তথ্য জানিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, অতি সম্প্রতি চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ থেকে লোকজন আসছেন এবং চীন এই ব্যাপারটিকে দুই দেশের পারস্পরিক ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির একটি চিত্র হিসেবে দেখতে আগ্রহী।
রয়টার্সকে ওই মুখপাত্র বলেন, বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে চীন ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। সেসবেরই একটি অংশ এই চিকিৎসা। ব্যাপারটি কিন্তু এমন নয় যে আমরা তৃতীয় কোনো দেশকে চাপে রাখতে বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি করছি; এমন কোনো উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য আমাদের নেই; বরং এ ব্যাপারটিকে বাংলাদেশি নাগরিকদের পর্যটনের একটি নতুন খাত হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
এ ইস্যুতে ভারত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, তবে দুই দেশের মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
যদিও নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন দুটি বাস্তব কারণে বাংলাদেশিদের চিকিৎসা ভিসা প্রদান কমিয়ে দিয়েছে দেশটি। প্রথমটি হলো বাংলাদেশের ভারতীয় দূতাবাসে লোকবলের অভাব। ওই কর্মকর্তা জানান, আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারতীয় দূতাবাসের অনেক কর্মকর্তা নিরাপত্তাজনিত কারণে ভারতে ফিরে এসেছেন। তাদের শূন্যস্থান এখনও পূরণ হয়নি।
আর দ্বিতীয় কারণ হলো, অনেক বাংলাদেশিই ভারতে প্রবেশের জন্য চিকিৎসা ভিসার অপব্যবহার করছেন। এই অপব্যবহারকারীদের বেশিরভাগই বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে সংশ্লিষ্ট এবং এদের সবার বিরুদ্ধেই দুর্নীতি ও অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে।
“বাংলাদেশে একটি স্থিতিশীল সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে ধীরে ধীরে ভিসা প্রদানের ব্যাপারটি স্বাভাবিক হবে বলে আমরা আশা করছি,” রয়টার্সকে বলেছেন ওই কর্মকর্তা।