শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নন, তিনি অন্য দেশের মুখ্যমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মুহাম্মদ মামুনুল হক।
৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচার অভিযোগে হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু
মাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় মধ্যরাতে শুনানি, ৪ আসামি রিমান্ডে
হাসিনা সরকারের সময় বাংলাদেশ দুর্নীতির সাগরে নিমজ্জিত ছিল: ড. ইউনূস
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পঞ্চগড় স্টেডিয়ামে নৈরাজ্য রোধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় এক জনসভায় তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা মেগা মেগা প্রকল্পের নামে লাখ লাখ কোটি টাকার মেগা দুর্নীতি করে বাংলাদেশকে ধ্বংসের মুখে ফেলে দিয়েছেন। " '
জনসভায় মামুনুল হক বলেন, ‘শেখ হাসিনা ১৬ বছর বাংলাদেশকে চুষে নিয়ে ১৬ টুকরো লাগেজ নিয়ে বোনকে নিয়ে হেলিকপ্টারে করে নরেন্দ্র মোদির বাড়িতে যান। ন১৯৭৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৫০ বছর ছিল শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার রাজনীতি।
তিনি শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েই সন্তুষ্ট নন, তিনি অন্য দেশের মুখ্যমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। '। '
অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, 'শেখ হাসিনার শুধু বাংলাদেশের ওপর প্রতিশোধ নেয়নি, আওয়ামী লীগের ওপরও নিয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বলেছিলেন পঁচাত্তরে আপনারা কোথায় ছিলেন। তিনি একবারও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীর কথা ভাবেননি।
পালিয়ে গেছেন। শেখ হাসিনার মতো একজন প্রতিশোধপরায়ণ সাইকোপ্যাথ ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীকে বছরের পর বছর মানুষের কাঁধের ওপর বসিয়ে শাসন করার ব্যবস্থা করেছে, শুধু এ কারণেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিচার হওয়া উচিত। ’
একাত্তরের বিষয় টেনে মামুনুল হক বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিল কোরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনো আইন তৈরি হবে না তার ভিত্তিতে। কিন্তু আমরা দেখলাম, বিজয়ের পর সাত কোটি মানুষের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাহাত্তরে বাংলাদেশের মানুষের ওপর একটি সংবিধান চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বাহাত্তরের এই চেতনার মাধ্যমে একাত্তরের চেতনাকে হাইজাক করা হয়েছিল। একাত্তর থেকে পঁচাত্তর পর্যন্ত ৩০ হাজার যুবককে হত্যা করেছে বাকশালীরা। যদি ৩০ হাজার মানুষের প্রাণের কোনো মূল্য না থাকে তাহলে এদেশের মানুষের কাছে আপনার বাপ ভাইয়ের রক্তের কোনো মূল্য থাকবে না।
গত ১৬ বছরে গুম খুনের বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘একতরফা নির্বাচন করে বাংলাদেশের জনগণের অভিপ্রায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে ভিনদেশি কোনো এক রাষ্ট্রের আশীর্বাদে ও সমর্থনে বাংলার মসনদ দখল করে রাখার জন্য অসংখ্য বিরোধী নেতাকর্মীকে গুম, খুন ও হত্যা করা হয়েছে। জুলাই থেকে আগস্টে সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করেও শেখ হাসিনার রক্ততৃষ্ণা মেটেনি। তিনি প্রয়োজনে লাখো মানুষ হত্যা করেও ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলেন। ’
মামুনুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশে কখনোই সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা হতো না। এটি ছিল নাটক। এই নাটকের কুশীলব ছিল শেখ হাসিনা ও তার দোসররা। এরা রাতের অন্ধকারে কালনাগিনী হয়ে সংখ্যালঘুদের ছোবল মারত। আবার সকালে ওঝা হয়ে ঝাড়ত। এখন তারা নেই, নাটকও নেই। এখন বাংলাদেশ সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুসলিমদের প্রধান দায়িত্ব হলো দুর্গাপূজাসহ সব সময় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়া। পুলিশ ও প্রশাসনকে সরকারি দল নয়, রাষ্ট্রের কাজে, জনগণের কাজে নিয়োজিত থাকতে হবে।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির পঞ্চগড়ের সভাপতি মীর মোর্শেদ তুহিন, জেলা জামায়াতের আমির ইকবাল হোসাইনসহ খেলাফত মসজিশের কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতাকর্মীসহ হাজারও মানুষ।