Dhaka, বুধবার, মার্চ ১২, ২০২৫

মাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় মধ্যরাতে শুনানি, ৪ আসামি রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০ মার্চ, ২০২৫, ০২:২৮ পিএম
Bangla Today News

মাগুরায় দুলাভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে আট বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হওয়া মূল অভিযুক্ত সন্দেহভাজন চার আসামির রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত। প্রধান আসামি ভুক্তভোগী শিশুর বোনের শ্বশুরকে সাত দিন এবং স্বামী, ভাসুর ও শাশুড়িকে পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রোববার (৯ মার্চ) মধ্যরাতে মাগুরা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল মতিন এর আদালত তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। নিরাপত্তা শঙ্কা থাকায় আসামিদের রোববার দিনে আদালতে হাজির করতে পারেনি পুলিশ। পরে রোববার দিবাগত মধ্যরাতে তাদের আদালতে নেওয়া হয়।

 

জানা গেছে, রোববার দিবাগত রাত ১২টার পর শুরু হয় রিমান্ড শুনানি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক মো. আলাউদ্দিন (তদন্ত) সকল আসামিদের সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। এ সময় আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেননি। আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিলে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন আসামিরা। রিমান্ড না দেওয়ারও দাবি করেন তারা।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভুক্তভোগী শিশু অচেতন থাকায় জবানবন্দি নেওয়া যায়নি। উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে মামলার মূল অভিযুক্তের সাত দিন ও অন্য তিন আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রিমান্ড আবেদনসহ অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি থাকলেও রোববার দিনে আসামিদের আদালতে হাজির করার ঝুঁকি নেওয়া যায়নি। দিনভর আন্দোলনকারীরা আদালতের ফটক ঘিরে রেখেছিল। আসামিদের তাদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলছিল। এ কারণে মধ্যরাতে শুনানি করেছেন আদালত।

এর আগে, শনিবার শিশুটির মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। এতে শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাসুরকে আসামি করা হয়েছে। তারা আগে থেকেই পুলিশের হেফাজতে ছিলেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বোনের স্বামী, শাশুড়ি ও ভাসুরকে শনিবার বিকেলে কারাগারে পাঠানো হয়। আর শুক্রবার কারাগারে পাঠানো হয় বোনের শ্বশুরকে।

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ৫ মার্চ বুধবার রাত ১০টার দিকে খাবার খেয়ে বড় বোন ও তার স্বামীর সঙ্গে একই কক্ষে ঘুমায় শিশুটি। রাতে শিশুটির দুলাভাইয়ের (বোনের স্বামী) সহযোগিতায় তার বাবা তার মুখ চেপে ধরে কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন। সে চিৎকার করতে গেলে তার গলা চেপে ধরা হয়। পরে তাকে আবার বোনের কক্ষের মেঝেতে ফেলে রেখে যায়। এরপর অসুস্থ হলে পরদিন বেলা ১১টার দিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় শিশুটিকে।

ভুক্তভোগী শিশুটি এখনও অসুস্থ অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গত কয়েকদিন আগের এই ঘটনায় অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানেও অবস্থার উন্নতি না হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেও তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হলে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় মাগুরাসহ সারাদেশে ধর্ষকের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করছে সর্বস্তরের জনগণ।

Leave a comment