বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দল সিলেট স্ট্রাইকার্সের মালিকানা ইস্যুতে হঠাৎ করেই আলোড়ন উঠেছে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানা নেওয়ার অভিযোগে মামলা করেছেন দলের সাবেক চেয়ারম্যান সারোয়ার চৌধুরী।
এদিকে সিলেট স্ট্রাইকার্স কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। ফেসবুকে দীর্ঘ এক পোস্টে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন সারোয়ার।
বুধবার (২ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে প্রথম আসরে সিলেটের ফাইনাল খেলা নিয়ে তিনি বলেন, 'আপনারা অনেকেই হয়তো আমাকে সিলেট স্ট্রাইকার্সের মাধ্যমে চিনেন। 2023 বিপিএলে, সিলেট স্ট্রাইকার্স তাদের প্রথম মৌসুমে ফাইনাল খেলে এবং রানার্স আপ হয়। মাঠে সাফল্য ছিল দারুণ, কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য সবচেয়ে বড় অর্জন ছিল আমাদের দেশের খেলোয়াড়দের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স।
দ্বিতীয় আসরে অপ্রত্যাশিত বাধার সম্মুখীন হওয়ার অভিযোগ করেছেন সারোয়ার চৌধুরী।
বললেন, মাঠে খেলতে তো ভালোই লাগে, তাই না? আমাদের একটি সফল মৌসুম ছিল। সেই মৌসুমে আমি দলের চেয়ারম্যান ছিলাম; স্বপ্ন বাড়ছিল, স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটের। কিন্তু 2024 বিপিএলের আগে, আমি হঠাৎ করে একটি অপ্রত্যাশিত বাধার সম্মুখীন হয়েছিলাম। মাঠে সাফল্য পেলেও পরের মৌসুমে আমি দলের সঙ্গে থাকতে পারিনি, তারা আমাকে থাকতে দেয়নি। আর সিলেট বিপিএল শেষ করেছে ৭ দলের মধ্যে ৬ষ্ঠ স্থানে। আর দর্শকদের মনে হয়েছে সিলেট আগের মৌসুমের মতো উদ্যমী নয় এবং পেশাদারিত্বের অভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
মাশরাফির সাথে পরিচয়ের শুরুতে সরওয়ার চৌধুরী বলেন, আমি মূলত আমেরিকায় ব্যবসা করি, এছাড়াও আমি নিউইয়র্কে অবস্থিত এনওয়াইবিসিএল ক্রিকেট লিগের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং এই সংগঠনের সভাপতি হিসেবে ৫ বছর দায়িত্ব পালন করেছি এবং আমার হেলাল বিনের সাথে। নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে ইউসুফ। পরিচয় ও তার মাধ্যমেই মাশরাফি বিন মর্তুজার সঙ্গে পরিচয়। হ্যাঁ, বাংলাদেশ দলে মাশরাফি বিন মর্তুজা ছিলেন আমার প্রিয় খেলোয়াড়দের একজন। আর প্রিয় খেলোয়াড় নিজেই যখন আমাকে বিপিএলে দলে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, আমি সানন্দে বিশ্বাসের সাথে তা গ্রহণ করেছি। কিন্তু তারপরও আমি জানতাম না যে, কোন এক সময়ে মাশরাফির রাজনৈতিক অফিসে, যাকে আমি অনেক ভালোবাসি, হেলাল বিন ইউসুফ শুভরাইয়ের উপস্থিতিতে আমাকে অবরুদ্ধ ও হুমকি দেওয়া হবে, যার মাধ্যমে আমি এখানে আশা করি। আমি এটা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না—যাকে আমি অনেক ভালোবাসতাম সে এভাবে আমার বিরুদ্ধে চলে যাবে! এটি আমার জীবনের সবচেয়ে বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা ছিল।
তিনি আরও বলেন, মাশরাফি বিন মর্তুজা বাংলাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন। ক্রিকেটার হিসেবে অবশ্যই তার অনেক জনপ্রিয়তা ছিল/ আছে। এই অজানা হিংস্র চরিত্রটি দেখার আগে আমি নিজেই তার একজন বিশাল ভক্ত ছিলাম এবং আমি জানি যে কেউ অভিযোগ করলে বিশ্বাস করতে আমার খুব কষ্ট হতো। আমার জন্য সবচেয়ে কঠিন ছিল মাশরাফিকে নতুন করে দেখা। তিনি শুধু বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়কই নন, তিনি ক্ষমতাসীন দলের এমপি ছিলেন এবং সেই সরকার ছিল স্বৈরাচারী। এত শক্তিশালী মানুষের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো প্রায় অসম্ভব ছিল। তাই বাংলাদেশে বসবাসকারী আমার এবং আমার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কিছু করতে পারিনি।