Dhaka, শনিবার, জানুয়ারী ৪, ২০২৫

ঘাঁটি নির্মাণে চীনের তৈরি ইট যাবে চাঁদে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৪ অক্টোবর, ২০২৪, ১০:২৮ এএম
Bangla Today News

ভবিষ্যতে চাঁদে ঘাঁটি নির্মাণের জন্য সম্প্রতি লুনার ব্রিকস বা চন্দ্র ইট তৈরি করলেন চীনা গবেষকরা। এটি এমন এক বিশেষ উপাদান থেকে তৈরি, যার গঠন চাঁদের মাটির মতোই বলে দাবি তাদের।

‘হুয়াজং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বা এইচইউএসটি’-এর সাম্প্রতিক এক ভিডিওতে দেখা গেছে, চন্দ্র ইট তৈরিতে চাঁদের মাটির সিমুলেশন ব্যবহার করেছেন চীনা গবেষক ও বিজ্ঞানী ডিং লিয়ুনের নেতৃত্বে গবেষকদের একটি দল, যা প্রচলিত লাল ইট বা কংক্রিটের ইটের চেয়েও তিনগুণ মজবুত।

 

অ্যাডিটিভ ম্যানুফ্যাকচারিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে আরেকটি নির্মাণ বিকল্পও তৈরি করেছে গবেষণা দলটি, যেখানে চাঁদের মাটি ব্যবহার করে ঘর প্রিন্ট করার জন্য একটি থ্রিডি প্রিন্টিং রোবট বানিয়েছেন তারা।

এইচইউএসটি-এর অধ্যাপক ঝো চেং বলেছেন, এই চন্দ্র ইট বা চাঁদের মাটির গঠন তৈরিতে পাঁচটি আলাদা ধরনের সিমুলেটেড ও তিনটি ভিন্ন সিন্টারিং প্রক্রিয়া ব্যবহার করেছে গবেষণা দলটি, যা ভবিষ্যতে চাঁদে ঘাঁটি নির্মাণের জন্য উপযুক্ত উপাদান নির্বাচন করতে আরো বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য দেবে।

সিন্টারিং হচ্ছে, পাউডার জাতীয় কোনো পদার্থকে এমনভাবে চাপ বা তাপ প্রয়োগ করা যাতে এটি গলে না গিয়ে আরো কঠিন রূপ ধারণ করে।

ঝো বলেছেন, চাঁদের মাটির গঠন বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। চাঁদের যে স্থানে চ্যাং’ই-৫ মহাকাশযান অবতরণ করেছে ঠিক সেই স্থানের মাটিকে অনুকরণ করেই বানানো হয়েছে আমাদের এই চন্দ্র ইট, যা মূলত আগ্নেয়গিরিজাত শিলা বা ব্যাসল্ট।

এক্ষেত্রে কিছু মাটির গঠন তৈরি হয়েছে চাঁদের অন্যান্য স্থানে পাওয়া মাটির অনুকরণ করেও, যা আদতে অ্যানথোসাইট। ক্রমাগত তাপ ও চাপ বেড়ে যাওয়ার ফলে সাধারণত বিটুমিনাস বা লিগনাইট কয়লার পরিবর্তিত রূপ থেকে অ্যানথোসাইট তৈরি হয়।

তবে চাঁদের পরিবেশে টিকে থাকতে পারবে কিনা তা দেখার জন্য নানা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে গবেষকদের তৈরি এসব ইটকে।

ঝো বলেন, মহাজাগতিক বিকিরণসহ চাঁদে রয়েছে এক অদ্ভুত রকমের বায়ুশূন্য পরিবেশ। চাঁদে দিনের তাপমাত্রা ১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায় ও রাতে মাইনাস ১৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে। তাই তাদের বানানো এসব ইট ভালোভাবে তাপ নিরোধক ও চাঁদের বিকিরণ সহ্য করতে পারে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।

তিয়ানঝু-৮ নামের কার্গো মহাকাশযানে করে গবেষকদের বানানো চাঁদের এসব ইট পাঠানো হবে চীনের মহাকাশ স্টেশনে, যাতে এগুলোর যান্ত্রিক ও তাপ সহ্যক্ষমতা এবং চাঁদের মহাজাগতিক বিকিরণ সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে কিনা তা দেখতে হবে।

গবেষকদের অনুমান, প্রথমবারের মতো পৃথিবীতে তৈরি এসব ইটকে চাঁদের মাটিতে পাঠানো সম্ভব হবে ২০২৫ সালের শেষনাগাদ।

মঙ্গলবার মহাকাশ বিজ্ঞানের জন্য জাতীয় পর্যায় থেকে এক দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন কর্মসূচি প্রকাশ করেছে চীন, যেখানে ২০৫০ সালের মধ্যে মহাকাশ বিজ্ঞানে উন্নয়নের একটি রূপরেখাও দিয়েছে দেশটি।

Leave a comment