সাত মাস পর কবর থেকে তানজিন তিশার সহকারীর লাশ উত্তোলন
শেখ হাসিনার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
'ইউনিয়ন ছাত্রদলের প্রেসিডেন্ট' বলা সেই নেতা গ্রেপ্তার
রাজশাহী নগরীর জিরো পয়েন্ট, সোনাদিঘীরমোড়, কলেজ গেট, সিএন্ডবি’র মোড়, রেইল গেইট, লক্ষীপুর মোড়, কাদিরগঞ্জ, সাহেব বাজার, লক্ষীপুর, বন্ধগেট, কাদিরগঞ্জ মোড়, বর্ণালীর মোড়, লোকনাথ স্কুল মার্কেট মোড়, আলুপট্রির মোড়, কাজলা মোড়, বিনোদপুর বাজার, সালাবাগান বাজার, নওদাপাড়া বাজার ও কোর্ট বাজার গুলোতে অটো রিক্সার যানজট।
বিপুল পরিমাণ অপরিকল্পিত অটো রিক্সার যানজট থামাতে হিমশিম খাচ্ছেন ট্রফিক পুলিশ। গত ৫ আগস্টের পর সড়কে কমেছে ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যাও। দৈনন্দিন জেলা শহরের পরিস্থিতি সাধারণ যাত্রীর চেয়ে অটো রিক্সার সংখ্যায় বেশি। আরএমপি ট্রাফিক পুলিশ তাদের কর্তব্য ত্রুটি না থাকলেও প্রতিনিয়িত হিমশিম খাচ্ছে ট্রাফিক বিভাগ।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক) তথ্য মতে, প্রতিদিন খুব ভোর থেকে শুরু হয় অটো রিক্সার উৎপাত। তবে রাত ১০টার পর থেকে ফাঁকা হতে শুরু করে শহরের সড়ক গুলো। নগরীর সড়ক গুলোতে প্রায ৭০-৮০ হাজার অটো রিক্সার চলাচল করছে। রাসিকের কাগজে-কলমে নিবন্ধন রয়েছে মাত্র ৯ হাজার অটো রিক্সার । প্রতিটি অটোরিকশার নম্বর প্লেটেই রাসিকের নম্বর দেওয়া রয়েছে। তবে জেলার ৯টি উপজেলা থেকে অনেক অটো রিক্সার রাসিকের নিবন্ধন ছাড়ায় শহরে প্রবেশ করছে। যার কারনে যানজটসহ পরিবশে নস্ট এবং ট্রাফিক আইন বিশৃঙ্খলা দেখা দিচ্ছে।
নগরীর অটো রিক্সার চালকের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাসিকের চক্রের মাধ্যেমে একই নিবন্ধন বেশ কয়েকবার ৪০-৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেছে। এই চক্রের মূল নায়ক ছিলেন অটো রিক্সার মালিক সমিতির সভাপতি ও মহানগর শ্রমিক লীগ নেতা সাগর হোসেন। সে সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের আস্থাভাজন হিসাবে নগরীতে অটো রিক্সার লাইসেন্স বাণিজ্য করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে। অটো রিক্সার পরিবর্তে টাউনসার্ভিস বাস চালু করার সিদ্ধান্ত হলেও সেটিও কার্যকর করা যায়নি। ফলে থামানো যায়নি ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সার দাপট। নগরীতে অটো রিক্সার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলেও সেখানে ব্যর্থ হয়েছে রাসিক।
রাসিকের তথ্যমতে জানা যায়, গত বছরের শুরুর দিকে প্রথম সপ্তাহে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত লাল রঙ এবং দুপুরের পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সবুজ রঙের অটো রিক্সার চলাচল নিয়ম বেধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই নিয়ম কিছুদিন পর থেকেই ভেঙ্গে যায়। ব্যাটারি চালিত দুই শ্রেণির অটো রিক্সার চলে শহরে। এর মধ্যে ৮ জন যাত্রীবাহন ক্ষমতার অ অটো রিক্সার রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার এবং ২জন যাত্রীবাহী ছোট অটো রিক্সার রয়েছে আরও প্রায় ৫০ হাজার। সবমিলিয়ে অন্তত ৭০-৮০ হাজার অটো রিক্সার চলাচল করছে মাত্র ৯৬ বর্গকিলোমিটারের এই নগরীতে। তবে এগুলোর মধ্যে মাত্র ১৪ হাজার ২৬২টি অটোরিকশার নিবন্ধন দেয়া হয় ২০১১-১৩ সালের মধ্যে। পূর্বের নিবন্ধন বাতিল করে ২০২১ সালে নতুন করে অনলাইনে আবেদন জমা নিয়ে ৮ হাজার ৯০০টির অটো রিক্সার নিবন্ধন দেয় রাসিক। পূর্বের সব নিবন্ধন বাতিল করা হলেও সেই অটো রিক্সার আগের ভুয়া নিবন্ধন নম্বর দিয়ে বাণিজ্যে নামে একটি চক্র। যার নেতৃত্বে ছিলেন অটো রিক্সার মালিক সমিতির সভাপতি সাগর হোসেন।
মহানগরী ট্রাফিক পুলিশর সার্জেন্ট বলেন, অটো রিক্সার চালকরা অনেকটাই বেপরোয়া। এদের নিয়ন্ত্রণ করাই কঠিন। যার ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনাও ঘটছে। আবার যানজট তো লেগেই থাকছে এই অটো রিক্সার কারণে। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে বৈঠক করেও অটো রিক্সার নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সমস্যা সমাধানের কোনো অগ্রগতি হয়নি।
এবিষয়ে সিটি করপোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ নূরে সাইদ বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা যানবাহন হিসেবে ঝুঁকিপূর্ণ। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে এগুলো বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও পরবর্তিতে সেই সিদ্ধান্ত এখন সিথিল করা হয়েছে। সেই সুযোগে নগরীতে হাজার হাজার অটো রিক্সা নেমেছে। অনিবন্ধিত অটো রিক্সা রোধে ট্রাফিক পুলিশ কাজ করে। রাসিকও অভিযান পরিচালনা করে। অটো রিক্সার ভুয়া লাইসেন্স প্রদানে বাণিজ্যের বিষয়ে তিনি জাননে না বলে দাবি করেন।
ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী