Dhaka, বুধবার, মার্চ ১২, ২০২৫

সার্জেন্টের নামেও চলে একাধিক গাড়ী আগের রূপে চাঁদাবাজরা, অতিষ্ঠ গাড়ির মালিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:১১ পিএম
Bangla Today News


প্রতিনিধি মোঃ নুর নবী 
চট্টগ্রাম নগরীতে পুলিশের নামে মাসোহারা আদায় করা একটি চক্র ফের চাঁদাবাজিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। অভিযোগ আছে দীর্ঘদিন যাবৎ এ চক্রটি  নগরীতে চলাচলকারী বিভিন্ন পরিবহণ থেকে চাঁদাবাজি করে আসছে। এছাড়াও চাঁদা না দিলে ট্রাফিক পুলিশ ও সার্জেন্টদের মাধ্যমে ট্রাফিক আইনে মামলা দিয়ে জরিমানা করে পরিবহণ মালিকদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পরিবহন মালিকদের। 

পরিবহণ শ্রমিক-মালিকদের অভিযোগ এ চক্রের সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশের সখ্যাতা  থাকায় অনেক ভুক্তভোগী একাধিক অভিযোগ করার পরও চক্রের সদস্যরা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। 

নগরীর হালিশহর, দেওয়ানহাট, অলঙ্কার মোড়, নতুন ব্রিজ, ইপিজেড, অক্সিজেন মোড়সহ ১৬ থানায় অন্তত অর্ধশতাধিক স্পট থেকে বিভিন্ন সমিতির নামে চাঁদা আদায় করা হতো। ওয়েবিলের নামেও প্রতিদিন আদায় করা হতো মোটা অঙ্কের অর্থ। তবে ৫ আগষ্টের পটপরিবর্তনের পর এই সকল কথিত সংগঠন বা সমিতির নামে চাঁদা নেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। গা ঢাকা দিয়েছিল কথিত সংগঠন ও শ্রমিক নেতারা। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই চিহ্নিত চাঁদাবাজরা আবারও আগের রূপে ফিরে আসছে বলে অভিযোগ করেন পরিবহণ শ্রমিক ও মালিকরা। 

জানা যায়, নগরীর হালিশহর-নিউমার্কেট ৩ নম্বর রুটে প্রায় তিন শতাধিক অটো টেম্পো চলাচল করে। এর মধ্যে বৈধ ম্যাক্সিমা ১০৭ টি, অটোটেম্পো ৭৭ টি বৈধ, অবৈধ অটোটেম্পো প্রায় ২৫০ টি। তবে এ রুটে ট্রাফিক সাজেন্টের নামে ও চলছে একাধিক গাড়ী। 

পরিবহণ চাঁদাবাজদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ গাড়ির মালিকরা। গত ১৭ ই নভেম্বর  মালিক-শ্রমিক মিলে চট্টগ্রাম মোট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর একটি অভিযোগ করেন এতে ৩ নং রোড়ে অবৈধ গাড়ীর বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যাবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়। অভিযোগ টি প্রায় ৭০ জন মালিক-শ্রমিকের পক্ষে করা হয়। 

এতে বলা হয় বিগত ৫ বছর যাবৎ মালিক-শ্রমিক আন্দোলেন করে আসছে। এ রুটের বেশির ভাগ গাড়ির ফিটনেস,  ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ যাবতীয় কাগজ পত্র ঠিক নেই। চলতি বছরের ফেব্রয়ারীতে বিআরটি মিটিংয়ে ১০৭ টি ম্যাক্সমা, ৭৭ টি অটোটেম্পো বৈধ গাড়ী ঘোষনা করা হয়। তবে অভিযোগে বলা হয়, এ রুটে প্রায় ২৫০ টি অবৈধ গাড়ি রয়েছে।

এছাড়াও এ রুটে ট্রাফিক সাজেন্টসহ নামসর্বস্ব কিছু ব্যাক্তির নামে অবৈধ গাড়ী চলে। এসব গাড়ীর বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়ার আবেদন করা হয়। 

৩ নং রোড়ের গাড়ী চালক সাগর বলেন, এ রুটের চেয়ারম্যান সফি,  আলাউদ্দিন, লাইনম্যান আলমগীর সহ আরো অনেকেই ৩ নং রোড়ে অবৈধ গাড়ী গুলো থেকে মাসোয়ারা নেন। এছাড়া বৈধ গাড়ী গুলো থেকে গেল ৫ আগষ্টের আগে পুলিশ ডিউটির নামে দিতে হত মাসিক চাঁদা ও ওয়াবিল। 

চাঁদা আদায়ের বিষয়ে শ্রমিক নেতা সফি সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি এবিষয়ে আমি জড়িত নই, একটি মহল আমার বিরুদ্ধে  ষড়তন্ত্র করছে। 

৫ আগস্টের সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ায় আবারও পুলিশের নামে মাসোহারা আদায়ে চাপ দিচ্ছে পরিবহণ সংগঠন গুলো।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের জনসংযোগ কর্মকর্তা তারেক আজিজ বলেন, পুলিশ কাজ করছে। পরিবহন সংশিষ্ট চাঁদা আদায়ের কোন সুযোগ নেই। যদি কেউ চাঁদাবাজি করে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। কেউ অভিযোগ করলে দ্রুত ব্যাবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া গত ১৭ নভেম্বর ৩ নং রোড়ের অবৈধ গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়ার জন্য সিএমপি কমিশনার বরাবর আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ  ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
 

Leave a comment