আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে দেশটি অভিমুখে লংমার্চ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল যৌথভাবে এ কর্মসূচি পালন করবে। ঢাকা থেকে আগরতলা অভিমুখে এই লংমার্চ অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) তিন সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভার্চুয়াল বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে লংমার্চের দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
Diseases are increasing in the heat wave, there is more patient pressure in the hospital
Chance of rain with gusty winds in seven parts of the country
ডিম-মুরগির দাম নির্ধারণ করে দিলো সরকার
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠেয় তিন সংগঠনের বৈঠকে এ বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। বিএনপি ও দলটির অঙ্গ সংগঠন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর অভিযোগ, ভারতে বসে বাংলাদেশবিরোধী নানা ষড়যন্ত্র করছেন হাসিনা। নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করাই তার লক্ষ্য। এ জন্য দলটির নেতাকর্মীদের বিভিন্ন সময় প্রস্তুত থাকারও নির্দেশনা দেন তিনি।
এ অবস্থার মধ্যে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ৮ দফা দাবিতে সোচ্চার থাকা বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এরপর তার ভক্ত-অনুসারীরা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। বিক্ষোভ চলাকালে চট্টগ্রামে এপিপি সাইফুল ইসলাম আলিফকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এমন প্রেক্ষাপটে চিন্ময় ইস্যুসহ সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনার পর ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা-ভাঙচুর ও জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীর মোতায়েন চান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের কিছু মহল ও মিডিয়া বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার ও প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের।
ভারতের এমন অবস্থানে খুশি নয় বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও এসব ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, ভারতের এমন আচরণ কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত। তারা অযাচিতভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে। তাই ভারতের প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দলটি। এরই ধারাবাহিকতায় লংমার্চের সিদ্ধান্ত এলো।
ভারতীয় আগ্রাসনের প্রতিবাদে প্রাথমিকভাবে আগামীকাল ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে স্মারকলিপি দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটা তেমন জোরালো প্রতিবাদ হবে না, এমন চিন্তা থেকে ভারতের আগরতলা অভিমুখে লংমার্চ করার সিদ্ধান্ত নেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।