কক্সবাজার টেকনাফের সাগরে মাছ শিকার করতে গিয়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হাতে আটক হয়ে জিম্মি থাকা বাংলাদেশি ২৬ জেলেকে ফেরত এনেছে বিজিবির সদস্যরা। শনিবার (১৫ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে টেকনাফ পৌরসভা ৭নং ওয়ার্ড সংলগ্ন নাফনদীর টার্ণজিট জেটি ঘাট দিয়ে এসব জেলেদের ফেরত আনতে সক্ষম হয় বিজিবি।
Padma Bank MD resigns, new face in four banks
কক্সবাজারে ২ নারীর পেটে মিলল ৪ হাজার ইয়াবা
কক্সবাজারে সমন্বয়কের বাবাকে হত্যা, বিচারের দাবি এনসিপির
সময়ের কন্ঠস্বরকে উক্ত বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.আশিকুর রহমান (পিএসসি) জানান, গত এক মাস আগে সাগরে মাছ শিকার করতে গিয়ে মিয়ানমার বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্যরা তাদের জলসীমায় মাছ শিকার করার অপরাধে ফিশিং ট্রলারসহ ২১ জেলেকে আটক করে তাদের আওতায় জিম্মি করে রাখে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ দিন আগে নাফ নদী থেকে নৌকাসহ বেশ কয়েক জন জেলেকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর থেকে মিয়ানমার বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হাতে আটক হওয়া জেলেদের ফেরত আনতে সীমান্ত প্রহরী বিজিবি ওপার বাহিনীর সাথে যোগাযোগ তৎপরতা শুরু করে। অবশেষে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর ২৬ জেলেকে ফেরতে আনতে সক্ষম হয়েছি। পাশাপাশি দীর্ঘ দিন ধরে ওপার বাহিনীর হাতে জব্দ থাকা একটি মাছ ধরার নৌকাও ফেরত এনেছি।
বাংলাদেশী জেলেরা সাগরে মাছ শিকার করতে করতে কোন এক সময় ভুলবশত বাংলাদেশ জলসীমার শূন্য লাইন অতিক্রম করে মিয়ানমার জলসীমায় ঢুকে পড়ে। উক্ত অপরাধে তাদেরকে ওপার বাহিনীর সদস্যরা ধরে নিয়ে গিয়ে জিম্মিদশায় আটকে রেখেছে বলেও জানান বিজিবির এই কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, ফেরত আসা জেলেরা সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে মিয়ানমার বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে ধরা পড়ে। এরপর আমাদের সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে থাকা বিজিবির গতিশীল প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় স্বল্প সময়ের মধ্যে এই ২৬ জেলেকে ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছি। তাদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।
দীর্ঘ এক মাস পর জিম্মিদশা থেকে ফেরত আসা,জেলে উখিয়া ট্যাংখালী এলাকার জায়েদ হোসেন সময়ের কন্ঠস্বরকে বলেন, গত এক মাস আগে সাগরে মাছ শিকার করতে করতে ভুলবশত মিয়ানমার জলসীমায় ঢুকে পড়ি। এরপর সেই দেশের আরাকান আর্মির সদস্যরা ফিশিং ট্রলারসহ আমাদের সবাইকে ধরে নিয়ে গিয়ে তাদের কব্জায় জিম্মি করে রাখে। এরপর বিজিবি সদস্যরা তাদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় আমরা নিজ দেশে ফেরত আসতে পেরেছি।
তবে ফিশিং ট্রলারটি এখনো ফেরত দেয়নি তারা। উক্ত ট্রলারটি টেকনাফ সদর ইউনিয়ন গুদারবীল এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ নুর প্রকাশ কালার মালিকাদ্বীন বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি টেকনাফ সীমান্ত প্রহরী বিজিবির সার্বিক প্রচেষ্টায় মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট বাহিনীর হাতে বিভিন্ন সময় আটক বাংলাদেশী ২৯ জেলেকে ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছিল।