প্রতিবেশী দেশ বেলারুশ থেকে আসা অনিয়মিত অভিবাসীদের আশ্রয় স্থগিত করতে চায় ইউরোপের দেশ পোল্যান্ড। পোলিশ সরকারের এ সংক্রান্ত একটি বিলে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের পর উচ্চকক্ষেরও অনুমোদন পেয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার এই বিলে সম্মতি দিয়েছে পোলিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেট। এর আগে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিলটিতে অনুমোদন দিয়েছিল দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘সেইম’।
7 killed including army captain in bomb attack in Pakistan
টানা ১৫ দিন ধরে গাজায় কোনো খাদ্যসহায়তা ঢোকেনি: জাতিসংঘ
There is no mood of Eid in Zimmi Saiduzzaman's house
পোল্যান্ড পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেট ১০০ আসন বিশিষ্ট। এর মধ্যে ৭২ জন সিনেটর বিলটিকে সমর্থন দিয়েছেন। এখন পোলিশ প্রেসিডেন্ট স্বাক্ষর করলেই বিলটি আইনে রূপ নেবে। যদিও এই আইনটির সমালোচনা ও নিন্দা জানিয়ে আসছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।
বিলটি আইন আকারে পাস হলে বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে আসা অনিয়মিত অভিবাসীদের আশ্রয় অধিকার সাময়িকভাবে স্থগিত করার অনুমতি পাবে পোলিশ সরকার।
দেশটির সরকার গত বছরের অক্টোবরে একটি নতুন অভিবাসন কৌশল গ্রহণ করেছে। এর লক্ষ্য হলো, অনিয়মিত অভিবাসীদের সংখ্যা কমানো এবং অভিবাসন প্রক্রিয়াকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা।
এই কৌশলের মধ্যে সরাসরি নিরাপত্তা হুমকি হিসাবে বিবেচিতদের আশ্রয় আবেদন সাময়িক স্থগিত করার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হাজার হাজার অনিয়মিত অভিবাসীকে রাশিয়া এবং তার মিত্র বেলারুশ মিলে ইউরোপীয় সীমান্তে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছে পোল্যান্ডসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত আরো বেশ কয়েকটি দেশ।
আইনটি পোলিশ সরকারকে তার সীমান্তের নির্দিষ্ট অংশে ৬০ দিন পর্যন্ত আশ্রয় প্রার্থনার অধিকার স্থগিত করার অনুমতি দেবে। পার্লামেন্টের অনুমোদনের মাধ্যমে এই সময়সীমা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে এবং তা অনির্দিষ্টকালও হতে পারে।
বিশেষ বিবেচনায় কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও রাখা হয়েছে আইনটিতে। বিশেষ করে অভিভাবকবিহীন শিশু, সন্তানসম্ভবা নারী এবং বয়স বা স্বাস্থ্যগত কারণে যাদের বিশেষ চিকিৎসা প্রয়োজন তাদের আশ্রয় চাওয়ার অধিকার সুরক্ষিত থাকবে। এছাড়া, কোনো অভিবাসী যদি প্রমাণ দিতে পারেন যে, তাকে বেলারুশে ফেরত পাঠানো হলে তার জীবন গুরুতর ঝুঁকিতে পড়বে, তাহলে তাকেও আশ্রয় চাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
আইনি বিধান অনুযায়ী, এখন পোলিশ সরকারকে সীমান্তের কোন অংশে এই আইনটি কার্যকর হবে তা, নির্দিষ্ট করে দিতে হবে। অপ্রাপ্তবয়স্ক সবার জন্য আশ্রয় অধিকার নিশ্চিত করাসহ বামপন্থিরা আইনটিতে তিনটি সংশোধন আনার কথা বলেছিলেন। কিন্তু সরকার সমর্থিত নিম্নকক্ষের আইনপ্রণেতারা তা গ্রহণ করেননি।
পোলিশ সরকারের নতুন এই আইনের সমালোচনা করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হেলসিংকি ফাউন্ডেশন ফর হিউম্যান রাইটস এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ) এর মতো মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়া বিষয়ক সিনিয়র গবেষক লিডিয়া গল বলেছেন, বর্তমানে ইইউ প্রেসিডেন্সির দায়িত্ব পালনকারী দেশ হিসাবে পোল্যান্ডের উচিত উদাহরণ তৈরি ও নিশ্চিত করা যে, যুদ্ধ ও নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা মানুষেরা আশ্রয় চাওয়ার সুযোগ পাবেন।
গল আরো বলেন, বিতর্কিত বিলটির ক্ষেত্রে পোল্যান্ডের উচিত আন্তর্জাতিক এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাধ্যবাধকতা মেনে চলা এবং এটি বাতিল করা। এইচআরডব্লিউ বলছে, এই পদক্ষেপটি বেলারুশের সঙ্গে থাকা পোল্যান্ড সীমান্তে ‘‘চলমান বেআইনি এবং অপমানজনক পুশব্যাকগুলোকে আনুষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করবে।’’ ইনফোমাইগ্রেন্টস।