Dhaka, বুধবার, এপ্রিল ৯, ২০২৫

চবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ- যুবলীগের হামলায় আহত ৫

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৩ অক্টোবর, ২০২৪, ০৭:৪৬ এএম
Bangla Today News

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রেল স্টেশন সংলগ্ন দোকান দখলকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এতে ৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

সোমবার (২১ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ হাটহাজারী উপজেলা যুবলীগের নেতা মোহাম্মদ হানিফের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়েছে। 

এ ঘটনায় আহত ৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ইনস্টিটিউট অব মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজ (আইএমএল) বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত গুরুতর আহত হয়ে চট্টগ্রাম পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া আরবি বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী 
নাজমুল হাসান, লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মোনায়েম শরীফ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ বিভাগের আব্দুল্লাহ আল নোমান ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের মুজাহিদুল ইসলাম। ৫ জনের আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চবির চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ আবু তৈয়ব। 

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,  সোমবার (২১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৩টার দিকে শিক্ষার্থীদের পরিচালিত একটি দোকান (আপ্যায়ন) দখল করতে আসে হাটহাজারী উপজেলার যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ হানিফের নেতাকর্মীরা। এ সময়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি থাকায় তাদের উপর ককটেল বিস্ফোরণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে তারা। পরে ক্যাম্পাসে হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা ফজরের পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে জোড় হয়ে রেলগেইট হানিফের অফিসের দিকে হামলার প্রতিবাদে মিছিল নিয়ে যায় শিক্ষার্থীরা। ৩ জন পুলিশের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা ফিরে আসলে পেছন থেকে আবার শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফরণ ও গুলি বর্ষণ করে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী বলেন, যুবলীগের নেতাকর্মীরা রাত সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ করে এবং দোকানে ভাঙচুর করে। সকাল হওয়ার পরেও পুলিশের উপস্থিতি না আমরা দেখিনি। ক্যাম্পাসে আমরা অনিরাপদ। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন আমাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে না।

এ বিষয়ে হাটহাজারী থানার ওসি হাবিবুর রহমান  গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষার্থীরা যে অসহযোগিতার অভিযোগ করছে সেটা সঠিক নয়। আমরা ৬টা ১৮ মিনিটে খবর পেয়েছি এবং ৬টা ২৬ মিনিটে রেল ক্রসিংয়ের এখানে উপস্থিত হয়ে স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়েছিল তাদেরকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছে। যাতে শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের কোন ঝামেলা না হয়। আর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্বাভাবিক করার জন্য সবরকম সহযোগিতা করেছি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানবীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, স্থানীয়দের সাথে শিক্ষার্থীদের কোনো সংঘর্ষ হয়নি। ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা একটি দোকানে হামলা করায় এ ঘটনা তৈরি হয়েছে। আমি স্থানীয়দের সাথে আলাপ করেছি। তাঁরা শিক্ষার্থীদের প্রতিপক্ষ নন।

প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট রাতে রেলক্রসিং এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ হানিফ ও তার অনুসারীরা। সেসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষক মোজাম্মেল হকের গাড়ীতেও হামলা করে তারা।

মোহাম্মদ হানিফের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে রেলওয়ের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে দোকান থেকে ভাড়া নেয় সে। এছাড়া তার ছোটোভাই ছাত্রলীগ নেতা মো. ইকবাল পুরো ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় ডিস লাইন এবং ওয়াইফাইয়ের ব্যবসা করে। নিম্নমানের ইন্টারনেট সেবা দিয়ে দীর্ঘদিন এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে সে। শিক্ষার্থীরা  এসব সমস্যা নিয়ে মুখ খুললে হুমকিধামকি ও গুপ্ত হামলা চালানো হয় হানিফের নেতৃত্বে।

Leave a comment