বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের দ্বীপ জেলা ভোলায় ৫.০৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (tcf) পুনরুদ্ধারযোগ্য গ্যাসের মজুদ আবিষ্কৃত হয়েছে, যার বাজার মূল্য প্রায় ৬.৫ লাখ কোটি টাকা। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) ও রাশিয়ার গ্যাজপ্রমের যৌথ গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। এক টিসিএফ গ্যাস দেশের এক বছরের গ্যাসের চাহিদা মেটাতে পারে, অর্থাৎ ভোলার এই মজুদ থেকে আরও অন্তত পাঁচ বছরের চাহিদা মেটানো সম্ভব।
শাহবাজপুর ও ইলিশা এলাকায় ২.৪২৩ টিসিএফ এবং চরফ্যাশন এলাকায় ২.৬৮৬ টিসিএফ গ্যাসের মজুদ পাওয়া গেছে। ২০২০ সালে শুরু হওয়া এই গবেষণা চলতি বছরের (২০২৩) জুনে সম্পন্ন হয় এবং ইতোমধ্যে পেট্রোবাংলা ও বাপেক্সের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। গবেষণায় ভোলার ৬০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ৩ডি সিসমিক সার্ভে এবং চরফ্যাশনে ১৫২.৬ লাইন কিলোমিটার ২ডি সিসমিক সার্ভে করা হয়েছে।
গ্যাজপ্রমের মুখপাত্র এলেক্সি বেলবেজিয়াভ জানিয়েছেন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং নির্ভরযোগ্য ডাটা বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে, যা বাংলাদেশের জ্বালানি চাহিদার একটি বড় অংশ পূরণে সহায়ক হবে। পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার জানান, ভোলার গ্যাস জাতীয় গ্রিডে আনার পরিকল্পনা রয়েছে এবং বরিশাল ও খুলনায় গ্যাস পাইপলাইন স্থাপনের কাজ দ্রুত শুরু হবে। এলএনজি ও সিএনজির মাধ্যমে ঢাকায়ও গ্যাস সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, বর্তমানে ভোলায় পাঁচটি কূপ থেকে দৈনিক ৮০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে এবং আরও চারটি কূপ থেকে একই পরিমাণ গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে। প্রস্তাবিত পাঁচটি নতুন কূপের মাধ্যমে আগামী দুই বছরে দৈনিক আরও ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন সম্ভব হবে। সব মিলিয়ে ভোলার কূপগুলো থেকে দৈনিক ৯২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন সম্ভব হবে, যা দেশের গ্যাস সংকট কমাতে সহায়ক হবে এবং উচ্চমূল্যের এলএনজি আমদানি নির্ভরতা হ্রাস করবে।