Dhaka, সোমবার, মার্চ ১৭, ২০২৫

বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ, প্রতারক আইনের আশ্রয়ে নুতন কৌশল খুঁজছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০১:২৫ পিএম
Bangla Today News

 

ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী

আ’লীগ সরকারের সময় দলিয় ক্ষমতা ব্যবহার করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী বুলবুল হোসেন। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সরকারী চাকুরী দেওয়ার নাম করে বুলবুল হোসেনের আত্মিয় স্বজনদের কাছ থেকে ৪৫লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক জিয়ারুল ইসলাম (জিয়া)। সে জেলার কাটাখালি থানাধীন  মাসকাটা দীঘি এলাকার মোঃ ইয়াদ আলীর ছেলে। 

আজ মঙ্গলবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে ভুক্তভোগী তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১৫/০১/২০২২ ইং তারিখ রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে চাকুরী নিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পূর্বালী ব্যাংক কাটাখালি শাখার হিসাব নাম-নাফি নিহান ফার্মেসী, হিসাব নং-৩২৯৫৯০১০১০৬৮৩ এর ০৫/১২/২০২৪ইং তারিখ উল্লেখ করে ব্যাংক চেক নং ৮৪৩৯৫২২ এর বিনিময়ে ২৫ লক্ষ এবং ২০/০১/২০২৪ইং তারিখ উল্লেখ করে চেক নং ৮৪৩৯৫২৩ এর বিনিময়ে ২০ লক্ষ টাকা, সর্বমোট ৪৫ লক্ষ (পয়তাল্লিশ লক্ষ টাকা) টাকা নিয়েছে। ওই সময় তার আত্মীয় তুষার আহম্মেদ বলেন, অভিযুক্ত তাদের জানায় সাবেক সিটি মেয়রের এইএসএম খায়রুজ্জ¥ান লিটন তার খুব কাছের। রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে সেকশন অফিসার পদে চাকুরী নিয়ে দেওয়া কোন ব্যাপার না। যার কারনে সে এবং তার বোন কাফেলার চাকুরী জন্য নগদ অর্থ ৪৫ লক্ষ টাকা জিয়াউরকে দেয়। তুষারের অভিভাবক হিসাবে বুলবুল দায়িত্ব নিয়ে অভিযুক্তের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে।  

আওয়ামীলীগ সরকারের সময় এই বিশ^বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের যে কোন পদে নিয়োগ দেওয়া তার কাছে কোন বিষয়না বলে, বুলবুলকে আশ^স্ত করে। তদুপরি অভিযুক্ত জিয়াউল হক বলে, তিনি চাকুরী না নিয়ে দিতে পারলে উক্ত দুটি চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে নেওয়ার পরামর্শ দেয়।  বিশ^বিদ্যালয়ের চাকুরী প্রাপ্তির আশায় মাসের পর মাস এবং কয়েকটি বছর অতিবাহিত হয়ে যায়। পক্ষান্তরে তার পাওনা টাকা (৪৫ লক্ষ) ফেরত নেওয়ার দাবি জানায়। কিন্ত সে বিভিন্ন সময়ে আমার অর্থ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে থাকে। সময়ের ব্যবধানে সে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে অসম্মতি প্রকাশ করে। দীর্ঘ সময় পার হওয়ার কারনে বুলবুল “নাফি নিহান ফার্মেসী” প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংকে টাকা উত্তোলন করতে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলে তার ব্যাংক একাউন্টে কোন অর্থ নেই।  একাধিকবার তার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে ফোন রিসিব করে না। কদাচিৎ ফোন রিসিব করে বলে, রাজশাহীতে এমন কোন ব্যাক্তি নেই যে, তার কাছ থেকে টাকা আদায় করতে পারবে। আ’লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে, বেশি বিরক্ত করলে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিবে বলে হুমকি প্রদর্শন করে।

প্রসঙ্গত, আ’লীগ সরকার পতনের পর পুনরাই তার নিকট পাওনা টাকা ফেরত চাওয়া হয়। কিন্ত সে বলে, পরিস্থিতি ভালো না, সরকার ক্ষমতায় নেই, প্রয়োজনে তার জমি বা বিভিন্ন সম্পদ বিক্রয় করে দিয়ে টাকা দিবে বলে, মোবাইল ফোনে জানায়। দীর্ঘ দিনের তার কৌশলী প্রতারণা জালে ভুক্তভোগীকে নিঃস্ব করে দিয়ে তার পরিবারকে নানা রকমের হুকমি দিয়ে যাচ্ছে। পাওনা টাকার বিষয়ে তার সাথে আলোচনা করার জন্য অনেকবার তাকে ফোন দেওয়া হয়। কিন্ত সে আর ফোন রিসিব করেনা।  

বর্তমান ভুক্তভোগী ও তার নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ এবং মামলা দিয়ে হয়রানির নতুন প্রতারণা সৃষ্টি করছে এবং অজ্ঞাত অনেকের নাম জড়িত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি নিজে প্রতারিত হওয়ার পর অভিযুক্ত ব্যাক্তির বিষয়ে খোজ খবর নিয়ে জানতে পারে, অভিযুক্ত রাজশাহী জেলার কাটাখালি এলাকায় তার মতো অনেকের কাছ থেকে চাকুরী দেওয়ার নাম করে অনেক অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। সে একজন প্রতারক, চাকুরী দেওয়ার নামে দালালী ব্যবসা করছে। বর্তমান সে সত্য ঘটনাকে মিথ্যা ব্যাখ্যা সাজিয়ে সাধারন মানুষের কাছে সহানুভুতি নেওয়ার চেষ্টার নতুন ফাঁদ বুনছে। উল্লিখিত বিষয়টির সত্যতা রয়েছে। যার ভুক্তভোগী বুলবুল নিজেই। যার কারনে সাংবাদিকদের মাধ্যমে সত্যতার উদঘাটন করার দাবি করে ভুক্তভোগী বলেন, প্রশাসনের মাধ্যমে অভিযুক্তকে আইনের আওতায় নিয়ে উপযুক্ত বিচার করতে হবে এবং তার পরিবারের নিরাপত্তার দাবি জানান। সংবাদ সম্মলনে জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।                  

Leave a comment