রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ এ কাজের কারণে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব করে দিয়েছেন অথবা তাকে এ কারণেই জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়েছেন।’ এতিম অর্থ নিঃসঙ্গ। ইসলামের পরিভাষায় কোনো নাবালকের বাবা মারা গেলে সাবালক হওয়া পর্যন্ত সে এতিম। মেয়ে হলে বিয়ের আগপর্যন্ত এতিম হিসেবে গণ্য হবে।
এতিমেরা সমাজের সবচেয়ে অসহায় ও দুর্বল শ্রেণি। তাই এতিমদের লালনপালনের দায়িত্ব গ্রহণ করা বড় সওয়াবের কাজ। এখানে কয়েকটি ফজিলতের কথা তুলে ধরা হলো:-
আয়-রোজগারে বরকত লাভ:
Twitter account is suddenly disappearing, what is the reason?
Eid prayers are ordered 15 minutes after sunrise
বাংলাদেশে কী প্রভাব রাখতে পারেন ট্রাম্প
এতিমেরা সমাজের বোঝা নয়, রহমত। তাদের কারণেই আল্লাহ তাআলা খরা-দুর্ভিক্ষ থেকে আমাদের নিরাপদে রাখেন। আমাদের আয়-রোজগারে বরকত দেন। মহানবী (সা.) বলেন, ‘দুর্বল ও অসহায়দের পুনর্বাসনে আমাকে সাহায্য করো। তোমাদের দুর্বল-অসহায়দের কারণেই তোমরা সাহায্য ও রিজিকপ্রাপ্ত হও।’ (আবু দাউদ: ২৫৯৪)
আদর্শ পরিবারের স্বীকৃতি:
যে পরিবারে এতিমেরা স্থান পায়, তা নিঃসন্দেহে আদর্শ পরিবার। আর যে বাড়িতে এতিমের জায়গা নেই, তা নিকৃষ্ট বাড়ি। মহানবী (সা.) বলেন, ‘মুসলিমদের ওই বাড়ি সর্বোত্তম, যেখানে এতিম রয়েছে এবং তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা হয়। সবচেয়ে নিকৃষ্ট ওই বাড়ি, যেখানে এতিম আছে অথচ তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়।’ এরপর তিনি হাতের আঙুল দেখিয়ে বললেন, ‘আমি ও এতিমের দায়িত্ব নেওয়া ব্যক্তি জান্নাতে এভাবে থাকব।’ (ইবনে মাজাহ: ১১ / ৭৫)
হৃদয়ের কোমলতা লাভ:
এতিমের দায়িত্ব নেওয়ার কারণে আমাদের মনে মনুষ্যত্ববোধ জেগে ওঠে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে তাঁর মনের রুক্ষতার ব্যাপারে অভিযোগ করলেন। তিনি বললেন, ‘যদি তুমি তোমার মন নরম করতে চাও, তাহলে দরিদ্রকে খাওয়াও এবং এতিমের মাথায় হাত বুলিয়ে দাও।’ (মুসনাদে আহমদ: ২ / ৩৮৭)
অফুরান সওয়াব অর্জন:
এতিমকে সান্ত্বনা দেওয়া এবং তার উপকার করা অসংখ্য নেকি লাভের মাধ্যম। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো ছেলে অথবা মেয়ে এতিমের মাথায় একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে হাত বুলিয়ে দেয়, মাথার যত চুল দিয়ে তার হাতটি অতিক্রম করবে, তার তত সওয়াব অর্জিত হবে। …’ (মুসনাদে আহমদ: ৪৫/২৪৮)
আত্মীয় হলে দ্বিগুণ সওয়াব:
আত্মীয়স্বজনের মধ্যে অনেকেই এতিম হয়ে যায়। তাদের দায়িত্ব গ্রহণ করার ফজিলত আরও বেশি। তাদের স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে দ্বিগুণ সওয়াব দেওয়া হবে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদের স্ত্রী জয়নব (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘সেই সদকায় কি আমাকে প্রতিদান দেওয়া হবে, যা আমি আমার স্বামী ও আমার নিজস্ব এতিমের জন্য করে থাকি?’ তিনি বললেন, ‘এতে তোমার দ্বিগুণ সওয়াব হবে—সদকার সওয়াব এবং আত্মীয়তা রক্ষার সওয়াব।’
জান্নাতে উচ্চ মর্যাদালাভ:
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এতিমের দায়িত্ব নেওয়াকে জান্নাতি মানুষের বৈশিষ্ট্য বলে উল্লেখ করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে, ‘আল্লাহকে ভালোবেসে তারা অভাবগ্রস্ত, এতিম ও বন্দীদের খেতে দেয়।’ (সুরা দাহর: ৮) এতিমের দায়িত্ব গ্রহণকারীর জন্য জান্নাতের উচ্চাসন বরাদ্দ থাকবে। তিনি পরকালে রাসুল (সা.)-এর নৈকট্যলাভে ধন্য হবেন।
এতিমকে খাওয়ানো এক নারী সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ এ কাজের কারণে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব করে দিয়েছেন অথবা তাকে এ কারণেই জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়েছেন।’ (মুসলিম: ২৬৩০)।